বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে ডিআইজি মিজান অবশ্যই গ্রেফতার হবেন -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলে তিনি অবশ্যই গ্রেফতার হবেন। তিনি চাইলে আত্মসমর্পণ করতে পারেন।’ গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এই সভার আয়োজন করে।
ডিআইজি মিজান আত্মগোপনে বিদেশে চলে যেতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেন, ‘ডিআইজি মিজান যদি আত্মসমর্পণ করতে চান, তাহলে তিনি করতে পারবেন। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
ডিআইজি মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। এর আগে সোমবার (২৪ জুন) ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন)।
মাদক ব্যবসা ছাড়তে হবে
মাদক নির্মূল করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাদকের ডিমান্ড, সাপ্লাই রোধ করে এবং মাদকসেবীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সমানতালে কাজ করছি। মাদকের ডিমান্ড হ্রাসের ক্ষেত্রে আমরা সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করার দিকে জোর দিচ্ছি। এ আন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে যুক্ত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’ তিনি জানান, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গত বছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭ হাজার ৮৯৮টি সভা আয়োজন করেছে। ২৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাদকের সাপ্লাই হ্রাস করতে বর্ডার এলকায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।’
মাদকের চোরাচালান যে কোনও মূল্যে বন্ধ করা হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মাদকের চোরাকারবার করে আসছে, তাদের আর এ কাজ করতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক কারবারিরা আত্মসমর্পণ করছে। যদি তারা স্বেচ্ছায় মাদক ব্যবসা না ছাড়ে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।’
মাদকসেবীদের পুনর্বাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আসন বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালেও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, ডা. অরূপ রতন চৌধুরী প্রমুখ।
আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। ওই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা গতকাল বুধবার বাছিরের বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন।
‘এনামুল বাছির দেশত্যাগ করতে পারেন’- এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শককে একটি চিঠি দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ফানাফিল্যা। সেখানে বলা হয়, “ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (খন্দাকার এনামুল বাছির) ঘুষ লেনদেন ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের সত্যতা দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানের প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। “তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বক্তব্য গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য তার বরাবর নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, তিনি সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।"
অনুসন্ধান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বাছিরের বিদেশ গমন ঠেকানো জরুরি বলে মন্তব্য করা হয় ফানাফিল্যার চিঠিতে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ