শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নার্সারী করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই

মিরসরাইয়ে বিভিন্ন ফলদ, বনজ, ফুল ও কাঠের গাছের চারার নার্সারী করে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ওইসব নার্সারীর মালিকরা নিজেরা আর্থিকভাবে লাভের পাশাপাশি একদিকে তৈরি করছেন অন্যের কর্মসংস্থান। পাশাপাশি তাদের এই উদ্যোগ এলাকায় বনায়নসহ জলবায়ু পরির্বতনের কুপ্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করায় রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। নার্সারী উদ্যোক্তাদের এই কাজকে উৎসাহিত করতে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং কৃষিবিভাগও গ্রহণ করছে নানা উদ্যোগ। দেখা গেছে, মীরসরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠেছে প্রায় অর্ধশত বিভিন্ন ফলদ, বনজ, ফুল ও কাঠের চারার নার্সারী। অল্পপুঁজিতে নিজস্ব এবং ভাড়া নেওয়া জমিতে ওইসব নার্সারী করে সফল হয়েছেন উদ্যোক্তারা। স্বচ্ছলতা এনেছেন নিজেদের সংসারে। তাদের সফলতা দেখে এলাকার আরো নতুন নতুন লোক নার্সারী ব্যবসায় নিজেদের সম্পৃক্ত করছেন। ওইসব নার্সারীতে উৎপাদিত হচ্ছে লাখ লাখ গাছের চারা। প্রকারভেদে ওইসব নার্সারীতে মাসে ৫০ থেকে দুই লাখ টাকার চারা বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। আর হাতের কাছে উৎপাদিত হওয়ায় এলাকার লোকজন চারা রোপনে উৎসাহিত হচ্ছেন। জোরারগঞ্জের সীমা নার্সারীর মালিক মো. জাফর জানান, ফলদ, বনজ, ফুল ও কাঠের গাছের চারা বিক্রি করে মাসে ১৫ হাজার টাকা আয় করছি। এই টাকা দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলে যাচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণে অনেকে ছাদে, বাড়ির উঠোনে সৌন্দর্য বর্ধন বিভিন্ন গাছের চারা রোপন করছেন। ফলে চাহিদা বেড়েছে গাছের চারার।
প্রাকৃতিক ও মানুষ সৃষ্ট কারণে প্রতিবছরই কিছু গাছ নষ্ট হয়। সেই গাছের শূণ্যতা পূরণে নতুন গাছের চারা রোপন করা প্রয়োজন হয়। এইসব নার্সারীগুলো স্থানীয় লোকদের সেই চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে বলে জানালেন জোরারগঞ্জ আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নিতাই চন্দ্র দাশ। তার মতে, দেশের বনায়ন বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিরোধে এ নার্সারীগুলোতে উৎপাদিত চারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখানকার বিভিন্ন গাছের চারা নিজেদের বাড়িতে রোপন করতে এই নার্সারীগুলো সহায়তা করছে বলেও তার মতো অনেকের অভিমত। নার্সারী খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মীরসরাই উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কাজী আব্দুল আলীম জানান, আগামী মার্চ মাস থেকে তিন মাস মেয়াদী চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন কার্যালয়ে বেকার যুবক-যুবতীসহ উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু হবে। আগ্রহী নার্সারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। প্রশিক্ষণে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নার্সারী করে স্বাবলম্বী হওয়া যাবে। ওইসব প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য তার অধিদপ্তর থেকে সহজশর্তে ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে বলেও তিনি জানান। মীরসরাইয়ের উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, নার্সারী অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। মীরসরাইয়ে বর্তমানে ১৫টির মতো ছোট-বড় বিভিন্ন নার্সারীতে মালিকসহ বহু শ্রমিকের কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। নার্সারীগুলোকে পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ এবং তাদের উৎসাহিত করতে বৃক্ষ মেলার আয়োজনসহ পুরস্কার প্রদান করে তাদেরকে উৎসাহিত করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ