বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

জুন মাসে রাজনৈতিক সন্ত্রাস

মুহাম্মদ ওয়াছিয়ার রহমান : জুন মাসটি রাজনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ছিল। তবে বিএনপি সংসদ-সদস্যরা জাতীয় সংসদকে সরব রাখে। অন্য দিকে বগুড়া-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে বিএনপিকে জিতিয়ে সরকারকে লালকার্ড দেখায় জনগণ। এখানে আশংঙ্কার বিষয় হচ্ছে বগুড়া-৬ আসনে গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বিএনপি পায় ২ লাখ ৭ হাজার ভোট ও মহাজোট পায় ৪০ হাজার কিন্তু সেই একই সিটে গত ২৪ জুনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি পায় ৮৮ হাজার ৪২৩ ও মহাজোটের মূল দল আওয়ামী লীগ পায় ৩২,১৯৮ ভোট। জনগণের মাঝে নির্বাচন ও ভোট সম্পর্কে দারুণ নেতিবাচক মনোভাব। এখানে সরকারদলীয় ৮ হাজার ভোটারও নির্বাচন কেন্দ্রে যায়নি ভোট দিতে।
এ মাসে ৫৮টি রাজনৈতিক ঘটনার তথ্যে নিহতের সংখ্যা ১১। এই ১১ জনের ৭ জনই খুন হয় আওয়ামী লীগের হাতে, ছাত্রলীগের হাতে ২, যুবলীগের হাতে ১ ও তাবলীগ জামায়াতের হাতে ১ জন। এ মাসে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় প্রাপ্ত তথ্যে আহত হয় ১৭৩ জন এবং গ্রেফতার অনেক বেশী হলেও ৪৪ জনের তথ্য পাওয়া গেছে বাকীদের পরিচয় প্রকাশিত হয়নি, গ্রেফতারকৃতরা অধিকাংশই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং দন্ডপ্রাপ্ত ৪৮ জন, এই ৪৮ জনের আওয়ামী লীগের ২২, ছাত্রলীগের ১, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১২, ছাত্রদলের ১২ এবং জাপার ১ জন।
প্রাপ্ত তথ্যে জুন মাসে যারা নিহত হয়- (১) রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের হাতে বিএনপি নেতা খুন, (২) যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে কর্মী মমিনুর রহমান খুন, (৩) শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী ছৈয়াল খুন, (৪) বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল হাওলাদার খুন, (৫) মাদারীপুর সদরে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে যুবলীগ নেতা এরশাদ মুন্সী নিহত, (৬) শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে যুবলীগ নেতা ইমরান হোসেন সরদার খুন ও (৭) মাগুরার মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগ নেতার আঘাতে গর্ভজাত শিশু নিহত, (৮) নাটোরের বড়াইগ্রাম চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলে জেলা কমিটির সদস্য সোহেল রানা নিহত ও (৯) বরগুনা সদরে ছাত্রলীগ কর্মী রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী ও তাদের ক্যাডারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়, (১০) নোয়াখালীল বেগমগঞ্জে যুবলীগের দলীয় কোন্দলে কর্মী শাহাদাত হোসেন চৌধূরী নিহত এবং (১১) কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে তাবলীগ জামাতের দলীয় কোন্দলে প্রেট্রোল বোমার আঘাতে আব্দুর রহীম নামে একজন খুন হয়।
আওয়ামী লীগ ঃ ১ জুন খুলনা মহানগরীর ২৯ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সদর থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফকির সাইফুল ইসলামের সাথে দেখা করতে যান মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মী জলি আক্তার। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফকির সাইফুল ইসলাম তাকে মারধর করে। ৩ জুন মানিকগঞ্জের ঘিওরে বাঁচামারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল লতিফ বিরুদ্ধে ভিজিএফ-এর ২০৮ বস্তা চাল বিতরণ না করে গুদামে আটকিয়ে রাখে। ইউএনও সাবরিনা শারমিন খবর পেয়ে চাল উদ্ধার করে। জন প্রতি ১৫ কেজি দেয়ার কথা থাকেলও উপকার ভোগীদের মাঝে ৮ থেকে ১০ কেজি পরিমান বিতরণ করা হয়। লালমরিহাটের পাটগ্রামে কাফির বাজার সংলগ্ন বাইপাস সড়কের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আওয়ামী লীগ নেতা ও ঝোংড়া ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম। ৭ জুন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বৈদ্যেরগাঁও এলাকায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ। আওয়ামী লীগ নেতা আজিম উদ্দিন গ্রুপ ও শাহজাহান গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষে মামুন, নূরুজ্জামান খান, আবু তালেব, তানজীল, সেলিম জাভেদ ও শরীফসহ ১০ জন আহত হয়। বরগুনার বেতাগীতে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দিতে জন প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আদায় করে আওয়ামী লীগ বিবিচিনি ইউনিয়ন নেতা লোকমান হোসেন। তিনি ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এভাবে আত্মসাৎ করেন। ৯ জুন যশোরের চৌগাছা সদর ইউনিয়নের বেড়গোবিন্দপুর গ্রামে আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আজাদ হোসেন, ওয়াজেদ আলী, আমিনুর রহমান, হাফিজুর রহমান পিন্টু ও হারুন-অর-রশীদ আহত হয়। সদর ইউনিয়ন পরিষদের বিগত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীক ও বিদ্রোহী আনারস প্রতীকের সমর্থকদের মাঝে এই সংঘর্ষ হয়।
১০ জুন শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগৈর দলীয় দ্বন্দ্বে চান্দনী গ্রামের ইয়াকুব আলী ছৈয়াল খুন হয়। ইয়াকুব মটর সাইকেল যোগে বাজারে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষ গ্রুপ তাকে খুন করে। ভোজেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলী আহমেদ সিকদার গ্রুপ এবং অপর আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল হক গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বে এই হত্যাকান্ড ঘটে। ১১ জুন রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা নূরুল ইসলামকে খুন করে আওয়ামী লীগ বলে তার পরিবার দাবী করে। শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে বিএনপির নূরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের আব্দুর রহমান পটল সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে। ফলাফল ঘোষণার সময় নূরুল ইসলাম ২৫০ ভোটে এগিয়ে থাকে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের চাপে সাধারণ সম্পাদক পদের ফলাফল ঘোষণা বন্ধ থাকে। পরের দিন পুলিশ প্রহরায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুর রহমান পটলকে বিজয়ী ঘোষণা করে। নূরুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে আদালতে যান এবং আদালত তার পক্ষে রায় দেয়। এই নির্বাচনী বিরোধ নিয়ে নূরুল ইসলামকে খুন করা হয় বলে তার পরিবার দাবী করে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ কচুবুনিয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রহমান সরদার লাভলুকে ৩টি হত্যা মামলায় আটক করে পুলিশ। তবে লাভলু তাঁতী লীগে কাজ করে বলে জানা যায়।
১২ জুন জামালপুর শহরে সাংবাদিক মোস্তফা মঞ্জুরকে মারধর করা মামলার আসামী ও আওয়ামী লীগ নেতা হাসানুজ্জামান খানসহ ৮ আসামী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। ১৪ জুন যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে লস্করপুর গ্রামের কর্মী মমিনুর রহমান খুন হয়। নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ি সিকদার বাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর রহমানের বাড়ী থেকে উত্তর খানের অপহৃত ব্যাবসায়ী ইমরানকে উদ্ধার করে জনতা। জুম্মার নামাজে যাওয়ার সময় লোকজন ওই বাড়ীতে চিৎকারের শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে গিয়ে ইমরানকে উদ্ধার করে পুলিশে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সজল ও তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার মিতুকে আটক করে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি পাঁচবাড়িয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ব্যাপাক ভাংচুর করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর সমর্থিত গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষে শহীদ উল্লাহ, আনোয়ার, মান্না, ইয়াসিন, ইশরাত জাহান, হাবিব উল্লাহ, আব্দুল লতিফ, মাহমুদা, মোঃ শহীদ উল্লাহ ও অহিদুল ইসলামসহ ৩০ জন আহত হয়।
১৫ জুন বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল হাওলাদার খুন হয়। দলীয় প্রতিপক্ষ গ্রুপের মিজান, ইসমাইল, ফারুক, পক্ষী দফাদার, ইসমাইল বাঘা, ওমর আলী, উজ্জ্বল ও শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলা করে ফখরুলকে হত্যা করা হয়। মাদরীপুর সদরে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় ২২ নেতাকে বহিস্কার করে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী কাজল কৃষ্ণ দেব এবং বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক নৌ মন্ত্রীর ভাই ওবায়দুর রহমান খান কালু। সাবেক নৌ মন্ত্রী শাহজান খান তার ভাইয়ের পক্ষে কাজ করে। মাগুরার মোহাম্মদপুরে ঘুল্লিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপের সংঘর্ষে সোহেল, চুন্নু মোল্লা, জিল্লুর খান, শাহিনুর মোল্লা, জিন্না ফকির ও শান্ত বিশ্বাসসহ ১৫ জন আহত হয়। বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং অপর নেতা পিকুলের সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ছাড়াও দোকানপাট, বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। ১৮ জুন ফেনীর ছাগলনাইয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যাপক ভোট কাটাকাটি। ভোটার শূন্য কেন্দ্র দখল করে এই কাটাকাটি করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চান্দুরা সাওতাঁল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএম-এর যন্ত্রাংশ খুলে নেয় আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্টরা।
১৯ জুন মাদারীপুর শহরের সবুজবাগ এলাকায় উপজেলা নির্বাচনত্তোর সহিংসতায় যুবলীগ নেতা এরশাদ মুন্সী নিহত ও অপর ২৫ জন আহত হয়। আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে কোন্দলে এই হত্যাকান্ড হয়। এরশাদ মুন্সী দলীয় প্রার্থী কাজল কৃষ্ণ দের সমর্থক। বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুর রহমান খান সাবেক মন্ত্রী শাহজান খানের ভাই। এ সময় ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী সুলিমপাড়ায় আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপের সংঘর্ষে হৃদয়, ইব্রাহিম, রবিউল, আরিফ, রাসেল আহমেদ, জসিম, ইসমাইল, ইউসুফ, রাকিব, সাইদুল, শুভ ও মিজান আহত হয়। যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শেষে পুলিশ আক্তার হোসেন, মিজান, আব্দুল হান্নান, স্বপন, ফিরোজ আহমেদ, শাহাদাৎ হোসেন, রবিন, বিল্লাল হোসেন, নূর হোসেন, মিজানুর ও শামীমকে আটক করে। 
২০ জুন বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে দলীয় কোন্দলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসবক লীগ উপজেলা সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম আনিস ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস আলী আহত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিজানুর রহমান খান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে উপজেলা কৃষক লীগ যুগ্ম-আহবায়ক মেহেদী হাসান সজলকে আটক করে। বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার পাঁওগাছা এলাকা থেকে ৪ গ্রাম হিরোইনসহ আওয়ামী লীগ তালোড়া পৌর সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চয়নকে আটক করে পুলিশ। ২৩ জুন শরীয়তপুরের নড়িয়ায় নশাসন মাঝিরহাট কবর স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে যুবলীগ নেতা ইমরান হোসেন সরদার খুন হয়। গত ২২ জুন রাতে ইমরান আহত হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এলাকায় ইমরান মারা যায়। এ সময় নিহার বেগমে বাড়ী ভাংচুর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে। সুনামগঞ্জে ছাতকে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদ চৌধূরী পুলিশ আহত মামলা ও বিস্ফোরণ মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠায়। 
২৪ জুন জামালপুরের বকশীগঞ্জে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সাধুরপাড়া ইউনিয়ন সহ-সভাপতি আক্কাস আলী, আব্দুল আজিজ ও আকরাম হোসেনকে আটক করে পুলিশ। ২৬ জুন মাগুরার মোহাম্মদপুরের নারকেলবাড়িয়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ সিকেন্দার আলী অন্তঃসত্ত্বা মুক্তা পারভীনের ওপর হামলা করে। গত ২২ তারিখের আঘাতে মুক্তা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মোহাম্মদপুর উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়। মোহাম্মদপুর উপজেলা হাসপাতাল ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে এবং সেখানে চার দিন পর একটি কন্যা সন্তান প্রশব করে। আঘাত জনিত কারনে নবজাতক মারা যায়। ২৭ জুন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি এ.কে.এম আব্দুল আউয়ালকে তলব করে দুদক। ঘুষ-দুর্নীতি, টেন্ডারবাজী, সেতু-ফেরীঘাট ইজারা, নিয়োগ বানিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তাকে তলব করে দুদক।
ছাত্র লীগ ঃ ২ জুন নাটোরের বড়াইগ্রাম চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলে জেলা কমিটির সদস্য সোহেল রানা নিহত হয়। পৌর সভার মহিষভাঙ্গা ঈদ মাঠ সাজানোকে কেন্দ্র করে উঠানো এক’শ টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এই হত্যাকান্ড হয়। পটুয়াখালীর দুমকিতে উপজেলা যুবদল যুগ্ম-আহবায়ক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনকে রাজাখালী বাসষ্ট্যান্ডে মারপিট করে সাইফুল ইসলাম ও সহিদ হাওলাদারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ৮ জুন নরসিংদীর পলাশে চরসিন্দুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল জহির, নাদিম, কাইউম ও নায়েক আল-আমিনকে মারধর করে ছাত্রলীগ। এ সময় তারা পুলিশের পোষাক ছিড়ে ফেলে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রাজন, সুমন মিয়া, শফিকুল ভূঁইয়া, জহির, শুভ মিয়া ও রাজনকে আটক করে।
১০ জুন বগুড়া শহরে ছাত্রদল জেলা সভাপতি আবু হাসানের উপর হামলা করে ছাত্রলীগ বলে দাবী করে ছাত্রদল। ১১ জুন নাটোরের সিংড়ার চৌগ্রাম ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি অভি দেবের বাড়ী থেকে ৬ জুয়াড়ী রফিক, শরিফুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, আল-আমিন, নূর নবী ও তাইজুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। ১২ জুন লালনিরহাটের হাতীবান্ধায় পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি বাঁধন পাটোয়ারীর হামলায় ওই ইউনিয়ন সদস্য আতিয়ার রহমান, নূর মোহাম্মদ ও আরাফাত আহত হয়। সিগারেট খেতে দিয়াশলাই না দেয়ায় এ হামলা করা হয়।
১৫ জুন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-ইমরানকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করার দায়ে বহিস্কার করে দলটি। ১৬ জুন বরিশালের উজিরপুরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে হস্তিশুন্ড গ্রামে ছাত্রলীগ নেতা মফিজুর রহমান তালুকদারের হাতে অপর নেতা ফয়জুল হক রাকিব আহত হয়। ২২ জুন চট্টগ্রাম প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে জামায়াত নেতা মাওলানা মমিনুল হক চৌধূরীর জানাজায় হামলা করে ছাত্রলীগ। হামলায় জোবায়েরসহ ৫ জন আহত হয়। ২৪ জুন লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ বাজারে আওয়ামী লীগের সভায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের মাঝে সংঘর্ষে পুলিশের এসআই সোহেল মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা মামুন, ফিরোজ, যুবলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক রিংকু, তাজু ভূঁইয়া, রোমেল, সৌরভ ও পারভেজসহ ১০ জন আহত হয়। ছাত্রলীগ নেতা কাজী বাবুল গ্রুপ ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে এই সংঘর্ষ হয়। [চলবে]

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ