বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিধি লঙ্ঘন করে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে নিয়োগের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার : ৮ দফা দাবি আদায়ে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদার এবং ব্যবস্থাপনা ও প্রকল্প পরিচালক আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে নতুন নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ ও আমার বাড়ি আমার খামার (একটি বাড়ি একটি খামার) প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি নামের দুটি সংগঠন ।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রকল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সোলায়মান, আমার বাড়ি আমার খামার (একটি বাড়ি একটি খামার) প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির সদস্য জিন্নাত আর তুলি, রাজিব সরকার, মো. রহমত, তরিকুল ইসলাম, মানস নন্দী, তাপস ইসলামসহ অনেকে। আর মানববন্ধনে কয়েক শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, বর্তমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ ও প্রাপ্য সুবিধা প্রদান না করা পর্যন্ত নতুন জনবল পদায়ন না করা, নিয়োগ বাণিজ্যে প্রায় অর্ধ কোটি টাকাসহ আটক ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতার করা, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে দেয়া নিয়োগ বাতিল করা এবং আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনোরূপ হয়রানি করা যাবে না।
মানববন্ধনে প্রকল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, ২০১৬ সালে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি পল্লীসঞ্চয় ব্যাংকের অধীনে নেওয়ার কথা ছিল। প্রকল্প ও ব্যাংকের আইন অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে পল্লীসঞ্চয় ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। তিনি বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারণে পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক তিন বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিধি-নিয়ম না মেনে ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিসহ অন্য কর্মকর্তারা নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। এরইমধ্যে এ অনিয়মের চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে।
সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান বলেন, গত ২৭ জুন বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে পল্লীসঞ্চয় ব্যাংকে কর্মকর্তা পদে ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করে নিয়োগে স্থগিতাদেশ নেওয়া হয়। বোর্ড কর্তৃপক্ষ এটি মানেনি। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় চাকরি স্থায়ী করার দাবি তুললে কর্তৃপক্ষ উল্টো বিভিন্ন টার্গেট দিয়েছে। টার্গেট পূরণ করলে চাকরি স্থায়ী করার কথা ছিল। কিন্তু এরপরও চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। এর আগে তারা সাত দফা দাবি নিয়ে ব্যাংকটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। সোমবার তাদের দাবির সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং পল্লী সেবা নামে আরও এক দফা দাবি যোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল- ২০১৬ সালের ৩০ জুনের আগে নিয়োগ দেওয়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’র সব জনবলকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে চাকরি স্থায়ী করে পরিপত্র জারি করা, স্থানান্তর প্রহসন বন্ধ করে বিগত তিন বছরের ইনক্রিমেন্ট, ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, সব পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া এবং মোবাইল ব্যাংকিং পল্লী সেবার মাধ্যমে সবার বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা, তাদের চাকরি স্থায়ী করার আগে নতুন জনবল ক্যাশ সহকারী, সিনিয়র অফিসার, উপ-আঞ্চলিক কর্মকর্তা পদে পদায়ন করা, নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে দেওয়া নিয়োগ বাতিল করা এবং আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো ধরনের হয়রানি না করা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ