শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিল নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড়

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল : বিএনপির মূল শক্তি বলে পরিচিত ছাত্রদলের কাউন্সিল নিয়ে চলছে তোড়জোড়। ২৭ বছর পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রদল প্রতিষ্ঠার পর গত ৪০ বছরের অর্ধেকের বেশি সময় কেটেছে পকেট কমিটির দুর্নাম নিয়ে। প্রতিটি কমিটি ঘোষণার পরেই বিশেষ প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে পকেট কমিটি হয়েছে বলে অভিযোগ করে দলের একটি অংশ বিদ্রোহ করে এসেছে। দলের নেতারা মনে করেন, বিগত সময়ে এভাবে পকেট কমিটি করায় ছাত্রদলের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিকাশ ঘটেনি। বারবার কোটারি স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে থেকেছে। এছাড়া সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে সিন্ডিকেটের পছন্দমতো প্রার্থী দেওয়ায় ভরাডুবি হয় ছাত্রদলের। ছাত্রদলের অভিভাবক হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হন। এর পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন কমিটি পকেট নয়, কাউন্সিলরদের ভোটেই নির্বাচিত হবে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
সূত্র মতে, ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্বে স্থান পেতে মনোনয়নপত্র কিনেছেন ১০৮ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৪২ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৬৬ জন। এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কেবলমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এরা হলেন, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান পাবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনসুরা আলম এবং  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডালিয়া রহমান। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই দুই পদের নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহন হবে। যাতে সারাদেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।
মনোনয়নপত্র বিক্রির শেষ দিনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে আসা কর্মী-সমর্থক শিক্ষার্থীদের ভিড়ে নয়া পল্টনের কার্যালয় ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’ শ্লোগানে মুখর ছিলো। মনোনয়ন ইচ্ছুক প্রার্থীরা ১‘শ টাকা মূল্যমানে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে। প্রার্থীদেরকে কাউন্সিল-২০১৯ এর তফসিলসহ একটি ফাইল দেয়া হয়। এতে ছিল মনোনয়ন ফরম, আবেদনপত্র, প্রার্থী যোগ্যতার নিয়মাবলী, আচরণবিধি, পুনঃতফসিলের কপি, প্রত্যায়নপত্র ও ভোটার তালিকা।
শনিবার ও গতকাল রোববার সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হয় জানিয়ে ছাত্র দলের সাবেক দফরত সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি বলেন, আমরা যে প্রত্যাশা করেছিলাম তার অধিক মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। এর কারণে দ্বিতীয় দিনে দুপুরের দিকে আমরা যে ফরম ছাপিয়ে ছিলাম তা শেষ যায়। পরে আবার ফরম ছাপিয়ে বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তরুণ্যের অহংকার আমাদের অভিভাবক তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় পরিচালিত ছাত্রদলের নতুন ধারার গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সংগঠনের সকল পর্যায়ে যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে তার প্রমাণ হচ্ছে আজকে মনোনয়নপত্র বেশি পরিমান বিক্রি ।
তিনি জানান, মনোনয়নপত্র জমাদান ১৯ ও ২০ আগস্ট, বাছাই ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ আগস্ট এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৩১ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীদের প্রচারনা ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত। আগামী ৪ জুলাই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, তালিকার ওপর আপত্তি ও নিষ্পত্তি ৫ ও ৬ জুলাই এবং চূড়ান্ত তালিকা ৭ জুলাই প্রকাশ করা হবে। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটের প্রচারণা চালাতে পারবেন।
ছাত্রদলের এই নির্বাচন সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপীল কমিটি গঠন করা হয়। 
সভাপতি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা: সভাপতি পদে যারা মনোনয়ন চান তারা হলেন, মো. মামুন খান, আমিনুল হাকিম মুন্সি, খলিলুর রহমান, আসাদুল আলম টিপু, আবু জাহান চৌধুরী হিমেল, এম আর আরজ আলী শান্ত, আল আমিন কাউসার, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, রিয়াজ মো. তানভীর রেজা, মো. ফজলুল হক নিরব, মো. আব্বাস আলী, তানভীর আহমদ খান ইকরাম, জসিম মোল্লা, মো. এরশাদ খান, মো. এহসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. জুয়েল মৃধা, মাসুদ রানা, মাহমুদুল হাসান বাপ্পী, হাফিজুর রহমান, এবিএম মাহমুদুল আলম সরদার, সোলায়মান হোসাইন, মো. সুরুজ মন্ডল, মো. ইলিয়াছ, মো. আজিম উদ্দিন মেরাজ, আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, ফজলুর রহমান খোকন, মাইনুল ইসলাম, মো. আবদুল মাজেদ, বিশ্বজিৎ ভদ্র, আল মেহেদি তালুকদার, সাজিদ হাসান বাবু, সিহাবুর রহমান, এস এম আল আমীন, আবদুল হান্নান, মো. আলী হাওলাদার, এসএম আমিনুল ইসলাম, শামীম হোসেন, মো. আল আমিন, আরাফাত বিল্লাহ খান, নজরুল ইসলাম নাহিদ ও জসিম উদ্দিন।
সাধারণ সম্পাদক পদে : সাইদ মাহমুদ জুয়েল, মো. আলাউদ্দিন খান, এম এ কাইয়ুম, মশিউর রহমান রনি, এমদাদুল হক মজুমদার, মানসুরা আলম, মো. হামিদ সাজ্জাদ হোসেন, মো. নাঈম হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. হাসান তানজিল হাসান, শেখ আবু তাহের, মো. তাবিবুর রহমান, এম সাখাওয়াত হোসাইন, ডালিয়া রহমান, মিজানুর রহমান সজীব, আজমীর হোসেন, আমিনুর রহমান আমিন, শাহনেওয়াজ, মুন্সি আনিসুর রহমান, আবদুল মোমেন মিয়া, নাজমুল হক হাবিব, আনিসুর রহমান সুমন, এবিএম জহিরউদ্দিন সোহেল, এন রাকীব জুয়েল, মিজানুর রহমান শরীফ, মো. ওমর ফারুক হিমেল, রিয়াদ মো. ইকবাল হোসেইন, একরামুল হাই নাঈম,  ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, মো. আবদুল মান্নান, মো. জামিল হোসেন, ইকবাল হোসাইন শ্যামল, মো. আবুল হাসান চৌধুরী, এএএম ইয়াহিয়া, নুরুল ইমরান মজমুদার শিশু, মো. মহিন উদ্দিন রাজু, রাকীবুল ইসলাম রাকিব, আরিফুল হক, আজিজুল হক সোহেল, রাশেদ ইকবাল খান, মো. জোব্ইার আল মাহমুদ রিজভী, মোস্তাফিজুর রহমান, সোহেল রানা, মাজেদুল ইসলাম রুম্মন, মাহমুদুল আলম শাহিন, মো. ইউসুফ কামাল জনি, বাবুল আখতার শান্ত, মো. মিজানুর রহমান, নাদিয়া পাঠান পাবন, জাকিরুল ইসলাম জাকির, আশিকুর রহমান সুমন, মো. জহিরুল ইসলাম দিপু, মো. আল মামুন, মো. সাইদুর রহমান সোহেল, মাহতাব উদ্দিন জিমি, জুলহাস উদ্দিন, আতাউর রহমান, কেএমএস মুসাব্বির, কাজী মাজহারুল ইসলাম, মোহাম্মদ আবুল বাশার, আশরাফুল আলম ফকীর লিংকন, আসাদুজ্জামান, সাদেকুর রহমান সাদিক, আশরাফুল আলম, দেলোয়ার হোসেন, সুলায়মান হোসাইন। 
মেধাবী নেতৃত্ব সন্ধানেই এই নির্বাচন: ছাত্র দলের নেতা নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনায় সাবেক ছাত্র দল নেতাদের সমন্বয়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।  এগুলো হলো- নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, বাছাই কমিটি ও আপীল কমিটি। আপীল কমিটির আহবায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল তার রাজনৈতিক লক্ষ্যে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন সম্ভাবনাময় দিনের সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পরামর্শে সাবেক ছাত্র দলের নেতারা উদ্যোগী হয়ে একটি ভুমিকা গ্রহন করেছে। সেটা হচ্ছে- জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের নির্বাচন। এই কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এদেশে স্বৈরতন্ত্রের পতনের অতীতে যে দৃষ্টান্ত ছাত্রদল স্থাপন করেছে ভবিষ্যতেও সেই দৃষ্টান্তকে উজ্জল পতাকার মতো পত পত করে তারা আগামী দিনে আকাশে উড়াবে। এই নির্বাচনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মেধাবী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব গড়ে তোলা। আমরা এতটুকু বলতে চাই, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মাকে কারাগার থেকে মুক্ত করা, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে, সাংবিধানিক একটি পরিস্থিতি তৈরি করা, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে একটি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে নিজের অধিকারের বাংলাদেশকে সামনে নিয়ে আসা।
ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, অনেকে বলেন ছাত্রদলের কাউন্সিল হঠাৎ করে হচ্ছে।। আসলে সেটি হঠাৎ করে হচ্ছে না। ছাত্রদল জন্মলগ্ন থেকেই তার কাউন্সিল ও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। আপনারা জানেন যে, এর পরে আমাদের গণতন্ত্র তার যে পথ চলা যেটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সামরিক শাসন এসেছে, গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে। এর মধ্যেও ছাত্রদলকে তার কর্মকান্ড করতে হয়েছে। এই কর্মকান্ড হয়ত যথাসময়ে  নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে করা যায়নি, অন্যান্য গুরু দায়িত্বও ছাত্রদল পালন করেছে। আমি বলতে চাই, ডেমোক্রেসি উইথ ইন দি পার্টি সেটা বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো শুরু থেকে চর্চা করে এসেছে, ছাত্রদল শুরু থেকে এটা করে এসছে। গণতন্ত্রের প্রতি যে অঙ্গীকার –এই ধারা তো তৈরি করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এই ধারা তো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার। এই গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে গিয়েই তিনি আজকে কারাগারে। এটাআজকে তিনি যদি সোচ্চার না থেকে নিশ্চুপ থাকতেন তার কিছুই হতো না।
তিনি বলেন, ছাত্রদলের এই কাউন্সিলকে ঘিরে আমাদের ছাত্র বন্ধুদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়েছে। আমি কখনো কখনো বিকালে বেরিয়ে রাতে ফিরি তখন দেখি রাত ১২টা পর্যন্ত ছাত্ররা অপেক্ষা করছেন তাদের কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা করছেন। এই যে উসবমুখর পরিবেশে, এই পরিবেশের মধ্য দিয়ে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আমাদের ছাত্র দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের যে অতীত গৌরবোজ্জল যে ইতিহাস রয়েছে- সেটা হলো দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রক্রিয়া ও চর্চা অব্যাহত রাখতে চাই। সেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মেধাবী, দক্ষ, প্রতিভাবান নেতৃত্বে নির্বাচিত হবে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা ও কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে ছাত্র দল ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করবে-এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।
মনোনয়ন পত্র প্রদানের এই অনুষ্ঠানে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির রাজীব আহসান ও আকরামুল হাসান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা : ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রত্ব আছে এমন প্রমাণপত্র অবশ্যই প্রার্থীদেরকে দাখিল করতে হবে। প্রার্থীকে ন্যুনতম স্নাতক পাশ হতে হবে এবং পাশের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। প্রমাণের জন্য সকল সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রার্থীদেরকে নিয়ে আসতে হবে।
বয়সসীমা উঠিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে গত ১০ জুলাই থেকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের আন্দোলন এবং পরবর্তিতে তাদের ১২ নেতাকে সংগঠনের শৃঙ্খলা বিরোধী কার্য্ক্রমের অভিযোগ বহিস্কারের পর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই পূণ:তফসিল ঘোষণা করলো। গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্র দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়। এরপর আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্প্দাক নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সর্বশেষ ছাত্রদলের কমিটি গঠন হয়েছিলো ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আকরামুল হাসানকে নির্বাচিত করা হয়। রাজীব-আকরামের নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা পর দীর্ঘদিন পরে এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়, যাতে ৭৩৬ জনকে পদ দেওয়া হয়েছিলো। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে, এক.প্রার্থীদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে, দুই. অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতেহবে এবং তিন.কেবলমাত্র ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যেকোন বছরে এসএসসি/সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণহতে হবে। জানা যায়, সবশেষ ১৯৯২ সালে পঞ্চম কাউন্সিলে সরাসরি ভোটে রুহুল কবির রিজভী ও এম ইলিয়াস আলী যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর পরের সবগুলো কমিটিই ছিল ‘পকেট কমিটি’। পুনঃতফসিল ঘোষণার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নেতারা জেলায় জেলায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ তো আছেই। শুধু ভোটারই নয়, সংশ্লিষ্ট জেলা-মহানগর এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ