বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ভারতের ঝাড়খণ্ডে গোমাংস বিক্রেতা সন্দেহে পিটিয়ে যুবক হত্যা ॥ আশঙ্কাজনক ২

২৩ সেপ্টেম্বর, ইন্টারনেট : ভারতের ঝাড়খণ্ড খুন্তি জেলার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে গোমাংস বিক্রির খবর ছড়ানোর পর প্রতিবেশী জালটান্ডা সুয়ারি গ্রামে তিনজনের উপর চড়াও হয় ১২-১৫ জনের একটি দল। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের দেখে পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন ওই তিনজন। তারা জনতার হাতে ধরা পড়ে যান। এরপরই শুরু হয় বেধড়ক মার। তবরেজ আনসারির পর ফের নৃশংস গণপিটুনির সাক্ষী হল ঝাড়খণ্ড।

গোমাংস বিক্রেতা সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হল কালান্তুস বারলা নামে এক যুবককে। বেদম মারে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও দু জন। এরা হলেন ফাগু কাচ্চাপন্দ ও ফিলিপ হাহোরো। তারা তিনজনই আদিবাসী খ্রিস্টান। ডিআইজি জানিয়েছেন, পরপর ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কারওকে গ্রেফতার করা হয়নি। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।

গত তিন মাসে এই নিয়ে ঝাড়খণ্ডে দুটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটল। জুনে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় তবরেজ আনসারিকে। ১৭ জুন ঝাড়খণ্ডের খরসওয়ান জেলায় তবরেজ আনসারিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে, চোর সন্দেহে পেটানো হয়েছিল। তবরেজকে গণপিটুনির সেই ভিডিয়ো সোশ্যালে ঝড় তোলে। ভিডিয়োয় দেখা যায়, কিছু অতিউৎসাহী নৃশংস ভাবে তাঁকে পেটাতে পেটাতে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করছে। ঘটনার পাঁচ দিন পর, ২২ জুন পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন মারা যান ওই যুবক। এই মামলায় মোট ১১ জনকে চিহ্নিতকরে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে প্রকাশ মণ্ডল ওরফে পাপু মণ্ডল, কামাল মাহাতো, সুনামো প্রধান, প্রেমচাঁদ মাহালি, সুমন্ত মাহাতো, মদন নায়েক, চামু নায়েক, মহেশ মাহালি, কুশল মাহালি, সায়ন্তন নায়েক ও ভীমসেন মণ্ডল।

সম্প্রতি জেলা পুলিশ তবরেজ আনসারি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা প্রত্যাহার করায়, চূড়ান্ত পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। গত সোমবার ঝাড়খণ্ড পুলিশের উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে তবরেজের স্ত্রী শাহিস্তা পারভিন জানান, গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা না দিলে, তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন।

তাবরেজের একুশ বছরের স্ত্রী শাহিস্তা রাঁচির পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখাও করেন। গিয়েছিলেন ডিসির দফতরেও। তাঁর আর্জি, অভিযুক্ত ১১ জনের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০৪ ধারার বদলে ৩০২ (খুন) ধারা দিতে হবে।

ঝাড়খণ্ড গণপিটুনিতে নিহত তাবরেজ আনসারির পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট বলা হয়, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা প্রত্যাহার করা হয়। মাথার খুলিতে চিড়, বিভিন্ন অরগ্যান ফেলিওর এবং হার্টের প্রকোষ্ঠে রক্ত জমাটবাঁধার মিলিত ফলই হল তবরেজের কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ