শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের পূর্বাভাস এডিবির

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনে বড় ভূমিকা রাখবে শিল্প খাত। এ অর্থবছরে জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ৮ শতাংশ। তবে অন্য খাত শক্তিশালী না করতে পারলে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে। উত্থানের পর পতনও আছে বাংলাদেশের। এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা আবাসিক মিশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৯’-এর হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এডিবি। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন এডিবির অর্থনীতিবিদ সন চ্যাং হং। এ সময় এডিবি ঢাকা অফিসের প্রধান মনমোহন প্রকাশ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনটি চার মাস পর পর প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির মধ্যে সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। কৃষি খাতের অবদান থাকবে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। গত এপ্রিলে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউট লুকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে দেশটির অর্জিত প্রবৃদ্ধি এর এক শতাংশ কম। এছাড়া পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বাংলাদেশের মূল প্রতিবেদনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল এবছর প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশ। নতুন প্রতিবেদনেও তেমনই আভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক ও বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রফতানি বাড়বে। তবে উচ্চতর প্রবাসী আয়ের কারণে বাড়বে ভোগব্যয়। একইসঙ্গে সহজ মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও বাড়বে। ব্যবসায় পরিবেশ উন্নত করতে চলমান সংস্কার এবং অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুবাদেও বাড়বে প্রবৃদ্ধি। একই সময়ে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন ও ভ্যাটের আওতা বাড়ার কারণে পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে বলে মনে করে এডিবি। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
এডিবি মনে করে রফতানি বহুমুখীকরণ, শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করা, মানব সম্পদ ও ভ্যাট আইনের কার্যকর প্রয়োগের বিষয়গুলো সরকারের বাজেট বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা ভালো অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থা ধরে রাখতে হলে শুধু পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। সেই সঙ্গে অন্যান্য খাতকেও শক্তিশালী করতে হবে। পোশাকের মতো অন্যান্য খাতকে শক্তিশালী না করতে পারলে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী চীনের প্রবৃদ্ধি ২০১৯ সাল শেষে দাঁড়াবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ, ২০২০ সালে তা আরও কমে ৬ শতাংশে দাঁড়াবে। ভারতের প্রবৃদ্ধি ২০১৯-এ ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০২০-এ দাঁড়াবে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি ২০১৯-এ ৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ২০২০ সালে দাঁড়াবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিচের দিকে থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন, হংকং, কোরিয়া ও চীনের তাইপে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া (২০১৯-এ ৫ দশমিক ১ এবং ২০২০-এ ৫ দশমিক ২), ফিলিপাইন্স (২০১৯-এ ৬ এবং ২০২০-এ ৬ দশমিক ২), সিঙ্গাপুর (২০১৯-এ দশমিক ৭ এবং ২০২০-এ ১ দশমিক ৪), থাইল্যান্ড (২০১৯-এ ৩ এবং ২০২০-এ ৩ দশমিক ২), দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত ও পাকিস্তান এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের পাপুয়া নিউগিনি।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি ওপরের দিকে থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, মধ্য এশিয়ার আজারবাইজান ও কাজাখস্তান এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের ফিজি। স্থির রয়েছে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধির হার।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ