শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ছড়া/কবিতা

প্রত্যাশা
মাজানুন্নাহার

প্রতিদিন সকালে কাতর নয়নে
চেয়ে থাকি মোরা প্রকৃতির পানে,
জাগল কি কোন বিবেক? অনিষ্ট হতে বাঁচাতে,
প্রস্ফুটিত পুষ্পের সনে, স্নিগ্ধ বাতাসের সমীরণে॥

সত্য যে আজ ভূলুণ্ঠিত, চারিদিকে হাহাকার
পঙ্কিলতার বিষবাষ্পে মানুষ দিশেহারা,
আকাশ সংস্কৃতির করাল গ্রাসে জর্জরিত প্রতিটি ঘর।
শান্তির পথে কেন নই, মোরা আজ পাগল পারা??
জ্ঞান আজ মুঠোফোনের বাটনের ভিতর বন্দী
অথবা ধুলায় জড়ানো বইয়ের মলাটের মাঝে,
জ্ঞানীরা ব্যস্ত অফিস আদালতে,
নতুবা ঘর সামলাতে দুনিয়ার রাজপথে॥

দুনিয়ার জীবনকাল কোন কাজে ব্যয় করেছি?
একদা যখন জিজ্ঞেস করা হবে,
কি উত্তর দেব প্রত্যেকে? ভেবেছি কি?
শুভ চিন্তার জগৎ কি এখন ডুবেছে সাগর গর্ভে??
শান্তির পথের পথিকরা আজ নির্যাতিত,
সবার ফরিয়াদ খোদার তরে,
আসবে কবে সেই সোনালী ভোর?
সত্যের সেনা নায়কের আহ্বানে॥
আমরা প্রত্যেকেই কি হতে পারি না?
আল্লাহর পথের সাড়া জাগানো কা-ারী,
সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই তো সম্ভব
কোরআনের আলোয় উদ্ভাসিত গড়া নতুন পৃথিবী॥
হে জনতা জাগো, ক্ষমা চাও প্রভুর কাছে,
ফরিয়াদ করো হৃদয়ের আর্তি মিশিয়ে,
বিবেকের দ্বার খুলে, সভ্য সমাজ পেতে
রাত্রি দ্বিপ্রহরে বিনয়াবনত হয়ে॥


বিয়ে বাড়ি
মারইয়াম জামিলা হাফসা

বিয়ে বাড়ির জ্বলছে বাতি হলুদ, সবুজ, নীল
তরুণ সমাজ স্ফূর্তি করে, হাসছে যে খিলখিল।
উচ্ছৃঙ্খল নৃত্য করে হিন্দি গানের তালে,
আঠার মত আটকে গেছে, রঙিন নেশার জালে।
কানের পর্দা ছিড়বে বুঝি? ডেকসেটের আওয়াজ
ছোট্ট শিশু কান্না করে ভয়ে ঘুমের মাঝ।
কারো কোনো নেই প্রতিবাদ, সবার মুখে তালা!
ভাল কথা শুনলে কারো, গা করে খুব জ¦ালা।
কাউকে তুমি কষ্ট দিয়ে মন করোনা ক্ষত,
সমাজ মাঝে সুবাস ছড়াও মিষ্টি-ফুলের মত।
অন্যায় কাজের বাঁধা দিত, দিওনা প্রশ্রয়
আল কোরআনের বিধান কায়েম করো জগৎময়।
কালের গর্ভে বিলীন হলো কতো ফেরাউন
ধ্বংসলীলায় তাদের হালৎ হয়েছে করুণ।
তরুণ সমাজ! শিক্ষা নিয়ে কর্ম করো ভালো
তবেই জীবন সুখের হবে, আলোয় ঝলোমলো।



আলোকিত নারী
হালিমাতুস সাদিয়া মারদিয়া

সুমাইয়ার রক্ত শপথে শুরু হয়েছিল
যে কাফেলা-
সে কাফেলা থামেনি আজো।
দুই, চার, ছয় এমনি করে
লক্ষ লক্ষ পায়ের চিহ্নে
সুশোভিত সিরাতুল মুস্তাকিম।

আজও সুমাইয়্যা আয়েশারা
বর্শা আর অপবাদের আঘাতে
জর্জরিত হয়।
জাকিয়ারা ফোটা ফোটা চোখের জলে
সিক্ত করে জায়নামাজ
প্রভুর সান্নিধ্যে।
দুনিয়াবী কষ্ট ভুলে
স্রষ্টার ভালোবাসায়
শুদ্ধ করে নিজেকে।
জয়নাব গাজালী, মরিয়ম জামিলরা
ঈমানের কষ্টিপাথরে
ঘষে ঘষে তৈরি করে
নিজেকে।
জীবনের ভালোবাসায়
জান্নাতের প্রত্যাশায়
প্রভুর সান্নিধ্যের আশায়।


রক্তাক্ত সিরিয়া
হালিমাতুস সাদিয়া মারদিয়া

মাঝে মাঝে আমি
নিজেকে হারিয়ে ফেলি
হাজারো মানুষের ভিড়ে
হাজারো শব্দের ভিড়ে
হাজারো চিন্তার ভিড়ে।

চোখ বুজলেই দেখতে পাই
সিরিয়া, মিয়ানমার-
আমার আড়াই বছরের
মেয়ের চোখে
আমি সিরিয়া দেখি।
রাস্তার ধূলোয় বসে থাকা
সিরিয়ার পাখি
কিংবা উদ্ভ্রান্তের মতো
ঘুরে বেড়ানো পরী।
অথবা সন্তানের লাশ বুকে নিয়ে
অসহায় পিতার আহাজারী
অথবা মায়ের কাছ থেকে
ছিনিয়ে নেয়া
ফিলিস্তিনী নারীর করুণ চাহনি।

আমি অন্ধকার দেখি
আমার চোখে আঁধার নামে
চোখের পাতা ভারী হয়ে যায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ