বড়াইগ্রামে অদক্ষ ডাক্তার দিয়ে অপারেশন ॥ ২ রোগীর মৃত্যু
বড়াইগ্রাম (নাটোর) সংবাদদাতা, ৮ অক্টোবর: নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া ও রাজাপুরে পৃথক ক্লিনিকে অদক্ষ চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর প্রশাসন বনপাড়া হেলথ কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছে। এছাড়া রাজাপুরের সৌরভ ক্লিনিকে তালা দিয়ে মালিক ও স্টাফরা পালিয়েছে। জানা যায়, শনিবার রাতে বনপাড়া হেলথ কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে উপজেলার তালশো গ্রামের রাহাবুল ইসলামের নববিবাহিতা মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের (১৮) অ্যাপেনডিসাইটিস অপারেশন করা হয়। কোন এনেসথেসিয়া চিকিৎসক ছাড়া ইন্টার্নী ডা. সামিরা তাবাসসুম সাথীর তত্ত্বাবধানে অপারেশনটি করা হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান। পরে রাতে রোগী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রাত ৩টার দিকে তাকে চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করেন। এর ঘন্টাখানেক পর সে সেখানে মারা যায়। এরপর থেকে চিকিৎসক ও ক্লিনিকের মালিক পলাতক রয়েছেন। খবর পেয়ে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তা সিলগালা করার নির্দেশ দেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুন অর রশিদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, শনিবার বিকালে উপজেলার রাজাপুর সৌরভ ক্লিনিকে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি রহিমপুর গ্রামের খলিল সরদারের স্ত্রী নীলা বেগমের (৫৮) অ্যাপেনডিসাইটিস অপারেশন করা হয়। হাসপাতালের মালিক মুলাডুলি এলাকার ফকির শেখের ছেলে গ্রাম্য ডাক্তার উমেদ আলী অপারেশনটি করেন। কিছু সময় পরে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে রাতে তিনি মারা যান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে তাকে অন্যত্র নিতে বলেন। স্বজনেরা রোগী নিয়ে চলে গেলে ক্লিনিক মালিক সবাইকে বের করে দিয়ে গেটে তালা দিয়ে পালিয়ে যান। পরে রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা এসে হাসপাতালটি ভাংচুর করেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও আনোয়ার পারভেজ জানান, বনপাড়ার হেলথ কেয়ার হাসপাতালের কোন কাগজপত্র ঠিক নাই। আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাই এবং পরীক্ষার যন্ত্রপাতি যথার্থ না থাকায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। অপর ঘটনাটি নিয়েও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান, বনপাড়ার ঘটনায় ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসককে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। অপর ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি, তবে খবর নেয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।