আবরার হত্যার আসামী সাদাত ‘ভারতে পালানোর সময়’ গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী এ এস এম নাজমুস সাদাতকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, গতকাল মঙ্গলবার ভোরে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানার কাটলা বাজার এলাকা থেকে সাদাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুয়েটের যন্ত্র কৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদাত ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। বুয়েট ছাত্রলীগের এই কর্মী দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান।
বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।
আবরারকে কীভাবে ক্রিকেট স্টাম্প আর স্কিপিং রোপ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটানো হয়েছিল, সেই ভয়ঙ্কর বিবরণ উঠে এসেছে গ্রেপ্তার কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার জবানবন্দিতে।
সাদাতকে নিয়ে এ পর্যন্ত মোট ২০ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করল পুলিশ। আবরারের বাবা যে ১৯ জনকে আসামী করে ঢাকার চকবাজার থানায় এ মামলা করেছিলেন, তাদের মধ্যে তিনজন এখনও পলাতক। পলাতক তিনজন হলেন- ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মাহমুদুল জিসান, কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এহতেশামুল রাব্বী তানিম এবং যন্ত্র কৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের মোর্শেদ।
বিরামপুর থানা-পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নাজমুস সাদাতকে গ্রেপ্তার করে বলে স্থানীয়রা জানান। নাজমুস জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উত্তরপাড়া হাফিজুর রহমানের ছেলে।
সততা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপক মো. আকরাম হোসেন বলেন, সোমবার রাত ১১টার দিকে জয়পুরহাটের সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান মাইক্রোবাসে করে নাজমুস সাদাতকে নিয়ে আসেন তার অফিসে। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলামসহ প্রায় সবার সঙ্গে আতাউর রহমানের পরিচয় ছিল। সে সময় আতাউর রহমান আকরামকে বলেন যে নাজমুস তার ভাগনে। গ্রামে একটি ঝামেলায় পড়েছেন। এলাকায় তার থাকাটা নিরাপদ নয়। তাকে কয়েকটা দিন এখানে রাখার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন তিনি। এই বলে নাজমুস সাদাতকে রেখে রাতেই সেখান থেকে ফিরে যান আতাউর রহমান। পরে ভোরের দিকে গ্রাম পুলিশদের ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, দরজার সামনে পুলিশ। ঘর থেকে পুলিশ তখন ওই ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়।
বিরামপুর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে নাজমুস সাদাতের ভারতে যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বিরামপুর থানায় আসে। ভোর ৪টার দিকে থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে রফিকুল ইসলামের অফিস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকায় নিয়ে যায় পুলিশ।