শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জলবায়ু মোকাবিলায় বিনিয়োগে নিশ্চয়তা দেবে গ্রিন বন্ড

স্টাফ রিপোর্টার: জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। উপকূলের নিম্নাঞ্চল ধীরে ধীরে পানির নিচে চলে যাওয়া, লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা বাড়া, পরিবেশ দূষণ, রোগবালাই বাড়াসহ নানা ধরনের জটিলতার মুখোমুখি বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামীতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হচ্ছে, হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে ‘গ্রিন বন্ড’-এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
গতকাল বুধবার এ লক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসির ভবনে দিনব্যাপী ‘ইন্ট্রোডিউসিং গ্রিন বন্ড ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক সেমিনারের আয়োজন করে বিএসইসি। সভায় গ্রিন বন্ডের সুবিধা, অসুবিধা ও প্রতিবন্ধকতাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বাংলাদেশে গ্রিন অর্থনীতিতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ হবে তার চিত্র তুলে ধরেন বিএসইসির পরিচালক মো. রেজাউল করিম।
আলোচকরা জানান, আগামীতে বিনিয়োগের বড় ক্ষেত্র হবে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি অপার সম্ভাবনার জায়গা। তাদের বিনিয়োগের নিশ্চয়তা জন্য গ্রিন বন্ড উন্নত করা প্রয়োজন। এতে বিনিয়োগকারীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি পরিবেশও সুরক্ষা পাবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন তারা।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, আমাদের বন্ড মার্কেট একেবারেই উন্নত নয়, যেখানে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। দেশে ৮ শতাংশের উপর জিডিপির প্রবৃদ্ধি, তবে এই প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না, যদি আমরা গ্রিন বন্ডের উন্নয়ন না করি। গ্রিন বন্ডের দিকে না যাই।
গ্রিন বন্ডের উন্নয়নের জন্য একটি নতুন আইন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলে আমাদের উন্নয়ন এতদিন কীভাবে হয়েছে। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই উন্নয়নগুলো করেছে। অথচ ব্যাংকগুলোর দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের কথা না। স্বল্প অথবা মধ্য মেয়াদী অর্থায়ন করার কথা ছিল ব্যাংকগুলোর। দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন করে আজকে যে অবস্থা হয়েছে, খেলাপি ঋণের অবস্থা এমন আকার ধারণ করেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে একটা বদ্ধমূল ধারণা হয়ে গেছে, শক্তিশালীদের সুদ দিতে হয় না, মূল টাকাও ফেরত দিতে হয় না। অথচ দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের জন্য একমাত্র শক্তিশালী উৎস বন্ড মার্কেট। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো বন্ড মার্কেট উন্নয়ন করে, সেখান থেকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নিয়ে সেবা, শিল্পায়ন, অবকাঠামো খাত গড়ে তুলেছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটি হয়নি।
বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা গ্রিন বন্ডে উন্নত দেশে বিনিয়োগ করছে। একদিকে তাদের দেশপ্রেম, অন্যদিকে বিনিয়োগের নিরাপত্তা বজায় থাকছে এবং নির্দিষ্ট হারে টাকা ফেরত পাচ্ছে তারা। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখেই দেশে গ্রিন বন্ডকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি আমরা প্রতিদিন হচ্ছি। প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বিরূপ পরিবেশ। সেখান থেকে মানুষ সরে যাচ্ছে। মানুষ থেকে থাকতে পারছে না। ওইসব এলাকার মানুষ বলছে, আমরা কিছু চাই না, খাবারের পানি দেন। এ রকম পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি প্রয়োজন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ