সখীপুরে হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর গাছ
জাকির হোসেন, সখীপুর : বৈচিত্র্যর্পূণ ছয় ঋতুর দশে আমাদের এই বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক এক রকমরে বৈশিষ্ট্য। তেমনি এক ঋতু হেমন্ত। এই ঋতুতেই দেখা মিলে শীতের। এই শীতের সময়ই শুধু পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর গাছের রস। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে মিষ্টি সুস্বাদু এই খেজুর গাছের রস খাওয়ার মজাই আলাদা বলে মনে করছনে গ্রামের অনেক মানুষরা। আর এই শীত মৌসুমের শুরুতেই সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত মৌসুমের প্রতিদিন সকালে গাছিদের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে দেখা যায়। র্বতমানে এই পেশার ওপর অনেক মানুষ র্নিভরশীল। তবে র্পূবের তুলনায় র্বতমানে খেজুর গাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় এই খেজুর গাছের রসের ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসছে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিস্কার করার কাজ করতে হয়। এরপর পরিষ্কার করা সেই সাদা অংশ থেকে বিশেষ এক ধরনের রস বেড় হয়ে আসে। বিভিন্ন কায়দায় ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়, তা দিয়ে তৈরি হয় মুখোরোচক খাবার।
ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই গাছিদের কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুলে খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করতে হয়। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিস্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বাঁধে রসের জন্য। আবার সকাল অনুমান সাড়ে ৫টা থেেক ৬ টার মধ্যে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে নিয়ে যায় তাদের র্নিদিষ্ট স্থানে। কেউ কেউ এই রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাট-বাজারে (কাঁচা রস) খাওয়ার জন্য বিক্রয় করে আবার কেউ কেউ সকালেই এই রস দিয়ে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করার কাজ শুরু করেন।গ্রামের অনেক মানুষ শীতের সকালে সুস্বাদু এই খেজুর রস ও খেজুরের রসের তৈরি গুড় নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। এই খেজুর রসের তৈরি বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি খাবার পায়েস ও হরেক রকমের লোভনীয় পিঠা। এটা বাঙালীর হাজার বছরের সংস্কৃতির একটি অংশ। তাই শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।