শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কৃষি ঋণ বিতরণে এবারও পিছিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো

 

স্টাফ রিপোর্টার: কৃষি ঋণ বিতরণে বরাবরের মত পিছিয়ে রয়েছে ব্যাংকগুলো। চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম ৫ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ৮ হাজার ৩০৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। অথচ এই অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।

এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তিন ভাগের এক ভাগ বা শতকরা ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

তথ্যমতে, কৃষি ঋণ বিতরণে পিছিয়ে রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এ পর্যন্ত বিতরণ হওয়ায় ৮ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর দেশি-বিদেশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা অনেকগুণ বেশি হলেও তারা বিতরণ করেছে মাত্র ৪ হাজার ২৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) ঋণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ফসল উৎপাদনে ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে; সেচ ও সেচযন্ত্র ক্রয়ে ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে; কৃষি খামারে এক হাজার ২৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা; শস্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা; দারিদ্র্য দূরীকরণে কর্মোদ্যোগে ৬৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক কর্মকাণ্ডে বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ৫৭ কোটি টাকা।

তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় টাকার পরিমাণের বিচারে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল ৭ হাজার ৪৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুই অর্থবছরের একই সময়সীমার মধ্যে কৃষিঋণ বিতরণের হার প্রায় সমান।

খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। এই লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের কমপক্ষে ২ শতাংশ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। একই সঙ্গে সুদের সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৯ শতাংশ।

তবে অনেক ব্যাংকই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। যে সব ব্যাংক কৃষিঋণ বিরতণ কম করে, জরিমানা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের একাউন্ট থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। পরের বছর অনর্জিত টাকা পুনরায় বিতরণ করলে কেটে রাখা টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

কৃষিঋণ বিভাগ সূত্র জানায়, কৃষিঋণ বিতরণে ২ শতাংশ বাধ্যতামূলক করে দেওয়ায় কৃষি খাতে অর্থের সঞ্চালন বেড়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানমতে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে যখন কৃষিঋণ বিতরণ ২ শতাংশ হারে বাধ্যতামূলক করা হয়, সেই বছর কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকার কিছু উপরে। ১০ বছরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় দেড়শ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ