বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সরকারি চাকরি আইনের ৪২ ধারার বিধান নিয়ে হাইকোর্টের রুল

স্টাফ রিপোর্টার: কোনো সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় এক বছরের বেশি মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে, উক্ত দণ্ড আরোপের রায় বা আদেশ দেওয়ার তারিখ থেকে চাকরি হতে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত হবেন- সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর এমন বিধান কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জাতীয় সংসদের স্পিকার, রাষ্ট্রপতি সচিবালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, লেজিসলেটিভ সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ রিট করা হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরে তিনি বলেন, আগের আইনে ছিল সাজা হলে চাকরি যাবে। এখন এক বছর করা হয়েছে। তার মানে এক বছরের কম সাজা হলে তার চাকরি যাবে না। আদালত অবমাননার আইনে বলা হয়েছে, ছয় মাস সাজা হলে চাকরি যাবে। এখন যদি এক বছরের সাজায় যদি চাকরি যাওয়ার আইন হয়, তাহলে আদালত অবমাননার সাজায় তো চাকরি যাবে না। শুনানির পর আজ আদালত রুল জারি করেছেন। অর্থাৎ আদালত অবমাননার সাজা হলে তাঁকে চাকরি হারাতে হবে না। ফলে আদালতের আদেশ-নির্দেশ উপেক্ষা করার সাহস পাবেন।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ২০১৩ সালের আদালত অবমাননার আইন পরিবর্তন করে সরকারি কর্মকর্তাদের আদালতের কাছে জবাবদিহির সুযোগ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এটি চ্যালেঞ্জ করা উচ্চ আদালতে তা বাতিল ঘোষিত হয়। এবারও একই উদ্দেশ্যে এক বছরের বেশি সাজা হলে চাকরিচ্যুতির বিধান করা হয়েছে, যাতে আদালত অবমাননায় দণ্ডিত হলে কেউ চাকরি হারাবেন। আইনের ৪২ ধারাটি সংবিধান ও উচ্চ আদালতের চেতনার পরিপন্থী বলে তা বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।
সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৪২ ধারায় এ বলা হয়েছে, ‘(১) কোনো সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড বা ১ (এক) বৎসর মেয়াদের অধিক মেয়াদের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইলে, উক্ত দণ্ড আরোপের রায় বা আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে চাকরি হইতে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত হইবেন।
(২) কোনো সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর মেয়াদের কোনো কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইলে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাহাকে নিম্নবর্ণিত যে কোনো দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে, যথা: (ক) তিরস্কার (খ) নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ (গ) নিম্নপদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ; অথবা  (ঘ) কোনো আইন বা সরকারি আদেশ অমান্যকরণ অথবা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হইলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ