বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মৃত্যু ১৭ হাজার, আক্রান্ত ৪ লাখের বেশি

* মধ্যরাত থেকে পুরো ভারত লকডাউন
* মৃত্যুকূপ স্পেনে বাড়িতে বাড়িতে বৃদ্ধদের লাশ
* যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৩৩৬
* ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে
* মিয়ানমারে দু’জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত
* সৌদিতে করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়েছে
* এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি থাইল্যান্ডে
স্টাফ রিপোর্টার: নভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৯৫  হাজার ৮১২ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১৭ হাজার ২৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ লাখ ৩ হাজার ৭৪৮ জন। বাংলাদেশ সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে এ সংখ্যা জানা গেছে। করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। ইউরোপের এই দেশটিতে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ৬০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সেখানে মৃত্যু ৬ হাজার ৭৭।
এদিকে মৃত্যুকূপ স্পেনে বাড়িতে বাড়িতে মিলছে বৃদ্ধদের লাশ। দেশটিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৫১৪ জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত ৬৫৮৪ হয়েছে। তুরস্কে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩৭। যুক্তরাজ্যে মৃত্যু বেড়ে ৩৩৬। সৌদিতে করোনায় প্রথম মৃত্যু হয়েছে। এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করছে থাইল্যান্ড। মিয়ানমারে দুজন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। ইতালিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮৯। ফলে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৯২৭। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭ হাজার ৪৩২ জন। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে চীনে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ১৭১ এবং মারা গেছে ৩ হাজার ২৭৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা চীনে। সেখানে মোট ৮১ হাজার ১৭১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ২৭৭ জনের। তবে মৃতের হিসেবে চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছয় হাজার ৭৭। আর আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯২৭ জন। মৃতের হিসাবে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ১৩৮। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৩১১ জনের। স্পেনের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইরানে।  বাংলাদেশে নতুন করে আরও ছয় জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগী ৩৩ জন। নতুন ছয় রোগীর মধ্যে পুরুষ তিন জন, নারী তিন জন। সরকারি হিসাবে, মোট মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। প্রতিবেশী দেশ ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬৭ জন। এর মধ্যে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানে আক্রান্ত হয়েছে ৮৭৩ জন। এর মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুকূপ স্পেনে বাড়িতে বাড়িতে মিলছে বৃদ্ধদের লাশ: প্রাণঘাতী নতুন করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত স্পেনে মর্মান্তিক কিছু ঘটনা এখন সামনে আসছে। দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তারা অনেক পরিত্যক্ত বাড়িতে বৃদ্ধদের বিছানায় কাতরাতে দেখছেন অথবা বিছানায় পড়ে থাকতে দেখছেন লাশ। মঙ্গলবার দেশটির প্রতিরক্ষাবাহিনীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। স্পেনের প্রসিকিউটর পরিত্যক্ত বাড়িতে মরদেহ পাওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ভয়াবহ করোনা প্রকোপে পরা স্পেনের বৃদ্ধাশ্রমগুলো পরিষ্কার করার কাজে সহায়তা করছে সেনাবাহিনী।
স্পেনে আজও ৫১৪ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৫৮৪: করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া নতুন করে আরও সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্পেনে একদিন আগে ৩৩ হাজার ৮৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলেও মঙ্গলবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৬৭৩ জনে। এছাড়া নতুন করে ৫১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট মারা গেলেন ২ হাজার ৬৯৬ জন।
করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব ইউরোপের দেশটিতে দিন যত যাচ্ছে ততই বেড়ে চলছে। দেশজুড়ে লকডাউন জারি করায় দেশটির ৪ কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ এখন গৃহবন্দি রয়েছেন। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব ধরনের মদের বার, দোকান-পাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান অফিস আদালত। তবে ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর দোকান ও সুপারশপ খোলা রয়েছে। দেশটিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। প্রত্যেকদিন নতুন করে কয়েক হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশটির হাসপাতালগুলোতে ঠাই হচ্ছে না রোগীদের। এমন পরিস্থিতিতে মাদ্রিদের বেশ কয়েকটি শপিংমল অস্থায়ী হাসপাতালে রূপ দেয়া হয়েছে।
৩৭: তুরস্কে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশজুড়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫২৯ এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। দেশজুড়ে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মুদি দোকান খোলার সময়, দোকানে ক্রেতার সংখ্যা এবং গণপরিবহনে যাত্রীর সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়াসহ বেশ কিছু বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করে দেওয়া হয়েছে। করোনার বিস্তার ঠেকাতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাজধানী আঙ্কারায় সব স্কুল, ক্যাফে, বার এবং মসজিদে একসঙ্গে নামাজ আদায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে দেশটির বেশকিছু প্রধান ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে। করোনার প্রকোপ যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য সব ধরনের বিমান চলাচল বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, নতুন করে ২৯৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৫২৯। এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৩৩৬: যুক্তরাজ্যে স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল যা ছিল ২৮১ জন। নতুন করে ৫৪ জনের মৃত্যু খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ (এনএইচএস)। নতুন করে প্রাণঘাতী করোনায় ৯৬৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০। মাত্র ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে এনএইসএস। ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, সরকারের স্বাস্থ্য সেবা পরামর্শ যারা মানছেন না তাদেরকে ‘স্বার্থপর’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গত রোববার দেশটির বিভিন্ন পার্কে লোকজনের জমায়েতের ছবি দেখে তিনি এমন মন্তব্য করেন। প্রয়োজনে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
এনএইচএস জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে গত ২৪ ঘন্টায় যারা মারা গেছেন তাদের অধিকাংশের বয়স ৪৭ থেকে ১০৫ বছরের মধ্যে। দেশটির রাজধানী শহর লন্ডনেই গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর আগে একদিনে লন্ডনে এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এদিকে দেশের সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার বিকেলে করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে তিনি দেশের সবাইকে ঘরে থেকে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে: ভারতে সরকারি হিসাবেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। ২৪ মার্চ মঙ্গলবার জরিপ পর্যালোচনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটার এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৫১১ জন। এর মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৭ জন। দেশের বাইরে ইরানে বসবাসকারী ২৯৮ জন ভারতীয় নাগরিকের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ভারতে এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৪১ জন বিদেশি নাগরিক। ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। সরকারি হিসাবেই সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭। এরপরেই রয়েছে কেরালা। রাজ্যটিতে এ পর্যন্ত ৯৫ জন আক্রান্ত হয়েছে।
গুজরাট, বিহার, কর্নাটক, দিল্লি, পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ ও হিমাচল প্রদেশ থেকেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গুরুত্বপূর্ণ সব রাজ্য থেকে সংক্রমণের খবর আসার পর অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধের সীমা বাড়িয়েছে দিল্লি। হাজার হাজার প্রবাসী ফিরতে থাকায় পাঞ্জাবে জারি করা হয়েছে কারফিউ। একই ব্যবস্থা নিয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রাজ্য মহারাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ৩০ রাজ্য ও বিভিন্ন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। এক টুইট বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘বহু মানুষ লকডাউনকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে না। দয়া করে নির্দেশনা পালন করে নিজেকে রক্ষা করুন, পরিবারকে রক্ষা করুন। আইন ও বিধিনিষেধ কার্যকর করা নিশ্চিত করতে আমি রাজ্য সরকারগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকা লোকজনের চিকিৎসার জন্য রাজ্যের সর্বত্র কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার ও স্টেডিয়াম অধিগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সৌদিতে করোনায় প্রথম মৃত্যু: মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২০৫ জন। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সৌদি আরবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আক্রান্ত নিয়ে দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৭৬৭ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, করোনায় মৃত ব্যক্তির বয়স ৫৮ বছর। তিনি আফগানিস্তানের নাগরিক। সোমবার রাতে তার স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটলে মদিনার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সোমবার সন্ধ্যায় দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এই কারফিউয়ের আদেশ দেন। সৌদি প্রেস এজেন্সি বলছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় কারফিউ (সান্ধ্য আইন) শুরু হবে। চলবে সকাল ৬টা পর্যন্ত।
মিয়ানমারে দুজন আক্রান্ত শনাক্ত: করোনা ভাইরাসে এই প্রথম কেউ আক্রান্ত হলেন মিয়ানমারে। চীনের প্রতিবেশী দেশ হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে এতদিন কোন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে মিয়ানমারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে দুজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন বলে ঘোষণা দেয়। মিয়ানমারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ৩৬ বছর বয়েসি একজন যুক্তরাষ্ট্র ও ২৬ বছর বয়েসের আরেকজন যুক্তরাজ্য থেকে সম্প্রতি মিয়ানমারে প্রবেশ করেন। এ দুজনের শরীরেই করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত দুজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই বার্তায় বলা হয়, এ দুজনের সঙ্গে সম্প্রতি যাদের সংস্পর্শ হয়েছে তাদের খোঁজে বের করার জন্য তদন্ত চলছে। তাদের প্রত্যেককেই কোয়ারেনটাইনে রাখা হবে। বিশ্বব্যাপী ত্রাস সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসে দুজন আক্রান্তের খবরে ইতিমধ্যে মিয়ানমারে রাজধানী ইয়াঙ্গুনে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে খবরে জানিয়েছে রয়টার্স। গত সপ্তাহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সকল স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেয় মিয়ানমার। এছাড়া জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা ও দোকানপাট বন্ধ করে দেয় সরকার। এর আগে চীনের সকল ভ্রমণ ভিসা স্থগিত করে দেশটি।
এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করছে থাইল্যান্ড: দেশজুড়ে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করতে যাচ্ছে থাইল্যান্ড। আগামী ২৬ মার্চ থেকে জরুরি অবস্থা কার্যকর হবে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা। প্রায়ুথ বলেন, জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে লোকজনের চলাচল কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমিয়ে আনতে আর কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেওয়া হবে। থাইল্যান্ডে নতুন করে ১০৬ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮২৭। অপরদিকে নতুন করে আরও তিনজনের মৃত্যু হওয়ায় এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। এছাড়া এখন পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫২ জন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ