ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী
লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা: করোনা সংক্রমন ঠেকাতে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত মঙ্গলবার দুপুরে শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌ-রুটে বিআইডব্লউিটিএ কর্তৃক লঞ্চ সি-বোট বন্ধ করার পরই এ ঘাটে আটকা পড়েছে হাজার হাজার যাত্রী আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিমুলিয়া ফেরী ঘাটের ইজারাদারের লোকেরা জনপ্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে ভাড়া কেটে এসব আটকে পড়া লোকজনকে ট্রলারে করে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবেই পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে। সরেজমিনে শিমুলিয়া ফেরী ঘাট, লঞ্চ ঘাট ও সি-বোট ঘাটে গিয়ে দেখা যায় কাঠালবাড়ী, মাঝিকান্দি ও মাছ ধরার অসংখ্য অবৈধ ট্রলার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব ট্রলারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় শামিম নামের এক ব্যক্তি। আর এ সবের প্রমাণ পাওয়া গেল অবৈধ ট্রলার চালানোর অভিযোগে মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ৫ জনকে আটক করে শিমুলিয়া ঘাটের পরিবহন লঞ্চ পল্টুনে রাখে। এমন সময় শামিম মাদবর দলবল নিয়ে আটককৃত ঐ লোকজনকে ছাড়ানের জন্য নৌ-পুলিশের কাছে তদবির নিয়ে আসে। এ সময় তাকে যখন বলা হয়, আপনার লোক না হলে আপনি কেন এসেছেন। আর গত রাত থেকে এ পর্যন্ত অসংখ্য ট্রলার ছেড়েছেন তখন তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে দলবল নিয়ে লঞ্চ ঘাট থেকে সটকে পড়েন। এ সময় মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ির আইসি পুলিশ পরিদর্শক মো: সিরাজুল কবিরের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি, কে শামিম মাদবর আমি চিনিনা। তাকে যখন বলা হয়, তাহলে আপনার সামনেই তো সে দলবল নিয়ে বসেছিলো। তখন তিনি এক এএসআইকে তার নাম ঠিকানা দিতে বলেন।
এদিকে এ ব্যাপারে ফেরী ঘাটের টিকিটিং এজেন্ট মেসার্স সামিউল এন্টারপ্রাইজের মালিক নেসার উদ্দিন নাসিরের সাথে মোবাইলে কয়েক দফায় ফোন করা হলে অবশেষে তিনি ফোন ধরে বলেন, আপনাকে আমি চিনিনা আমি কথা বুঝিনা বলে ফোনটি কেটে দেন। আবার যখন তাকে ফোন করা হয় তখন তিনি বলেন, এর সাথে আমি জড়িত না আপনারা যা পারেন লেখেন। এদিকে দুপুরের দিকে লৌহজং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাবেরুল ইসলাম খান এসে এসব ট্রলারগুলো বন্ধ করে দেয় এবং যাত্রীদের সচেতনতার জন্য মাইকিং করে তাদের ফেরীতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
অন্যদিকে ফেরী ঘাটে ফেরী চলাচল করলেও পারাপারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে হাজারো যানবাহন। আর এসব যানবাহনের সারি শিমুলিয়া ঘাট থেকে কুমারভোগ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রাইভেটকার, এ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশি। আটকে পড়া এসব যাত্রীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের বাসগুলো বন্ধ না করে শুধুমাত্র লঞ্চ, ফেরী ও সি-বোট বন্ধ করায় দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে বহুগুণ। ঢাকা থেকে বাসগুলো আগে বন্ধ করে দিয়ে পরে ফেরী, লঞ্চ ও সি-বোট চলাচল বন্ধ করলে আর যাত্রীদের দুর্ভোগ হতোনা।