শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রাজশাহী মেডিকেলের নার্সকে করোনা সন্দেহে ঢাকায় স্থানান্তর

রাজশাহী অফিস : করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের একজন নার্সকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে এ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায়  নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি কুর্মিটোলা হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে জ্বরসর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড়ি পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন এক নারী গতকাল মঙ্গলবার রাতে মারা গেছেন।
অসুস্থ নার্স রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় স্বামীর সঙ্গে বসবাসকারী ইতালিফেরত এক আত্মীয় প্রবাসীর সহযাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। তার স্বামী সাংবাদিকদের জানান, তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। তবে গতকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্ত্রী চিকিৎসকদের বার বার বলেছে, আমি নার্স, আমিতো বুঝতে পারছি। করোনা ভাইরাসের সব লক্ষণ আমার মধ্যে রয়েছে, দ্রুত পরীক্ষা করুন। কিন্তু গত চারদিনেও তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি।” গত ২১ মার্চ তাকে রাজশাহীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছিল। তবে সরঞ্জাম না থাকার কারণে চিকিৎসকেরা তার পরীক্ষা করতে পারেননি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা: সাইফুল ফেরদৌস। তিনি জানান, ওই নার্স ঢাকা থেকে বাসে ফেরার সময় তিনি ইতালিফেরত এক আত্মীয় প্রবাসীর সহযাত্রী ছিলেন। রাজশাহী ফিরেই তার জ্বর আসে। এ জন্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন বলে তিনি নিজেই সন্দেহ করে চিকিৎসকদের জানান। এরপর তাকে রাজশাহী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে পাঠানো হয়। কিন্তু পরে তিনি নিজের ইচ্ছায় বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিনে চলে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার সকালে তাকে আইসোলেশন ইউনিটে নেয়া হয়। পরে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইসিডিআর) যোগাযোগ করার পর তাকে রাতে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল সূত্র থেকে জানা গেছে, জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড়ি পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন এক নারী (৪৬) মঙ্গলবার রাতে মারা গেছেন। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৎপরতার মধ্যেই তার মৃত্যু হলো। তিনি ২০ মার্চ জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ২২ মার্চ আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত পৌনে একটার দিকে তিনি মারা যান। আইসিইউর ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, “রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে তারা প্রাথমিকভাবে তিনি মনে করছেন না। তার স্বজনেরা বলতে পারছেন না তিনি ভাইরাস বহনকারী কারো সংস্পর্শে গিয়েছেন কি-না। এটা নিয়ে তারা একটু শঙ্কায় আছেন। এ জন্য এই ইউনিটের দায়িত্বরত সবার সুরক্ষা পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল ওই নারীর নমুনা সংগ্রহের জন্য। 
জীবাণুনাশক স্প্রে শুরু: করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে রাজশাহী মহানগরীজুড়ে জীবাণুনাশক স্প্রে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসময় পুলিশের সাঁজোয়া যানে করে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে। বুধবার দুপুর আড়াইটায় মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধনের পর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট হতে আরডিএ মার্কেট, মনিচত্বর, সবজিপাড়া এলাকায় নিজে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ