শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

লকডাউন

-সাজজাদ হোসাইন খান
চলতশক্তিহীন হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী, খুব দ্রুত। ধেয়ে আসছে মহাশংকা। হাজার হাজার জীবনের ইতি ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। এটি যেন রোজকার রুটিন, বর্তমান পৃথিবীর। ঘুম থেকে জেগেই মানুষ শুনতে পাচ্ছে কেবলই মৃত্যুর খবর। অসুস্থতার সংবাদ। দেশে দেশে মানুষ এখন ঘরবন্দী। উৎকন্ঠা আতংক গ্রাস করছে প্রায় প্রতিটি ক্ষণ। কোলাহলময় পৃথিবী বলতে গেলে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে, স্তব্ধ-নিথর। রোদনের শক্তি যেন স্মিমিত হয়ে আসছে দিন দিন। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, লাশের মিছিল। এ মিছিল অগ্রসর হচ্ছে বাধাহীন, এক প্রকার। চিকিৎসা বিজ্ঞান এ মহামারীর কাছে ধরাশায়ী, অবস্থা দৃষ্টে তো এমনটাই মনে হচ্ছে। ওষুধ পাতিতেও জীবন ধরে রাখা কষ্টকর। একজন বাঁচলে বিপরিতে চলে যাচ্ছে তিনজন। মহাবলবান দেশগুলো চোখে সরষেফুল দেখছে। মন-মস্তিষ্কে কম্পন।
তামাম পৃথিবীর জনজীবন একপ্রকার লন্ডভন্ড। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ অর্থাৎ আমাদের অবস্থানও তেমন সুখকর নয়। এরি মধ্যে পাঁচজনের কেড়ে নিয়েছে জীবন। জনাপঞ্চাশেক শয্যাশায়ী। করোনা নামের মহামারী বিস্তার রোধে সারা দেশ এখন লকডাউনের আওতায়। মানুষজন গৃহবন্দী। জীবন হয়ে পড়েছে স্থবির। জানি না এ স্থবিরতার অবসান কবে হবে। আদৌ হবে কি না। জীবনকে বাঁচানোর জন্যেই তো এ লকডাউন। লকডাউন মান্যও করছে জনগণ বিশেষ করে শহরের মানুষ। কারণ এ ব্যাধিটি এমন এক ব্যাধি যা জন থেকে জনে বিস্তার ঘটে। স্পর্শে বিপত্তি ঘটায়। অলস সময় কাটছে হয়েতো গৃহবন্দী অনেকেরই। এদিক থেকে সংবাদকর্মীদের বিষয়টি ভিন্ন। তারা গৃহে আটকে থাকতে পারছেন না। সীমিত পরিষরে হলেও তাদের চলাফেরা কাজকর্ম থেমে নেই। মেলামেশা করতে হচ্ছে। সংবাদ কর্মীদেরও তো জীবন আছে। জীবনকে ব্যাধিমুক্ত রাখার প্রয়োজন আছে। অধিকার আছে বাঁচার। এ অধিকার/ প্রয়োজনটুকুকে যদি আমরা উপেক্ষা করি এর শেষ পরিণতি যে কি ভয়াবহ রূপে আসতে পারে তা তো চিন্তার অগম্য। এই পরিণতির ব্যাপারটি নিয়ে কি কেউ ভাববে না? স্মরণযোগ্য নিরাপত্তামূলক কোনো পোশাক আশাকও সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ নেই।
এখন লকডাউন চলছে। এই দুঃসময়ে পত্রিকা কজনে পড়বে? পাঠকের সংখ্যা সীমিত হয়ে আসছে দ্রুত। হকাররা নাড়াজ পত্রিকা বিলি বন্টনে। অন্যদিকে যোগাযোগ বন্ধ। পত্রিকা ছেপেই বা কি লাভ যদি সে পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছানোই না গেলো! এখন দুর্যোগের সময়। দুঃসময়ের, দুর্ভাবনারও। তাছাড়া কেবল বাংলাদেশই নয় সমগ্র মানবজাতি একটি আপদকালীন ক্ষন অতিক্রম করছে। তাই বিষয়টির ব্যাপারে তড়িৎ সিদ্ধান্তের প্রয়োজন আছে বৈ কি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ