শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

করোনার প্রভাবে শাহজাদপুরে দীর্ঘ হচ্ছে নিরন্ন মানুষের মিছিল

এম,এ, জাফর লিটন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : করোনার প্রভাবে সারাদেশে লক ডাউন ঘোষণার প্রেক্ষিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে নিরন্ন মানুষের মিছিল। কল কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান  সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির সাথে পাল্লা দিয়ে সারা দেশের ন্যায় শাহজাদপুরের অর্থনীতিও থমকে দাঁড়িয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী নারী-পুরুষ। উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম শাহজাদপুর কাপড়ের হাট, বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা কারখানা, হাজার হাজার তাঁত কাপড়ের কারখানা, সূতা প্রসেসিং মিল, বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর লক ডাউনের প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে শিল্প ও বাণিজ্য জনপদ শাহজাদপুরের সর্বত্রই এখন পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে। মিল্কভিটা, তাঁত কারখানা, সূতা মিলসহ বিভিন্ন কারখানার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় লক্ষাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক এখন বেকার হয়ে ঘরবন্দী আছে। এছাড়াও বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দর, কাপড়ের হাটসহ বিভিন্ন নদীঘাটের হাজার হাজার কুলি, এবং দিনমজুর, রিক্স্রা শ্রমিক, মটর শ্রমিক, কর্মহীন হয়ে পরায় তীব্র খাদ্য স্কংট দেখা দিচ্ছে এসব পরিবারে। খাবার জোগার করতে না পেরে এরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। লকডাউনের কারণে শাহজাদপুর পৌর এলাকা ছাড়াও আঞ্চলিক সড়কগুলিতে যানবহন চলাচলও কমে গেছে। ফলে সিএনজি, রিক্সা, ভ্যান চালকরা যাত্রী না পাওয়ায় তাদের আয় কমে গেছে। ধান, চাল,ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদীর মূল্য আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় অভাবী মানুষদের উপর মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে গোটা উপজেলার সর্বত্র অর্থ ও খাবারের অভাবে নিরব দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি বাজতে শুরু করেছে। সরকারিভাবে যা বরাদ্ধ আসছে তা মিলছেনা অধিকাংশের ভাগ্যে। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়নে ১৫০ প্যাকেট চাল,ডাল, যা দিয়ে একটি মহল্লার খাদ্য পূরণ করাই সম্ভব হচ্ছেনা।  বেসকারি ভাবে যৎ সামান্য যা দেয়া হচ্ছে তা একটি পরিবারের এক বেলার খাবারও হচ্ছেনা। ফলে সরকারি ও বেসরকারিভাবে যা দেয়া হচ্ছে তা দিয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি পাড়ি দেয়া অভাবী মানুষের জন্য দুঃসাধ্য।
এ ব্যাপারে ইসলামপুর ডায়া গ্রামের মিল শ্রমিক আব্দুর রহিম বলেন, গত ১০ দিন যাবত কারখানা বন্ধ, ঘরে বসে আছি। কাজ নেই খাবার নেই। স্ত্রী, পুত্র নিয়ে বড় কষ্টে আছি।
হামলাকোলা গ্রামের তাঁত শ্রমিক আলমগীর জানান, তাঁত ফ্যাক্টরী বন্ধ, জমিজমা নেই, এই দিয়েই জীবিকা চলে। ঘরে চাল নেই, খাবার নেই। সামনে কিভাবে চলব চিন্তায় আছি।
শেলাচাপড়ি গ্রামের আক্কাছ আলী জানান, আমি বন্দরের শ্রমিক। বন্দরে জাহাজ ভীড়ছেনা, কাজ কর্ম না থাকায় বড় অভাবে আছি।
এ ব্যাপারে কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যান ও এম,পি প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা দেশের সমস্যা না, আন্তর্জাতিক সমস্যা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী আমরা সাধ্যমত খাবার বিতরণের চেষ্টা করছি। এই দুর্যোগে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ