কবিতা
ভালোমানুষি
আকিব শিকদার
লাল চশমায় দুনিয়াটা লাল,
কালো চশমায় কালো
চোরের চোখে সকলেই চোর,
সাধু ভাবে সব ভালো।
মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব
হবেই হবে বন্ধ
সবাকে তোমার ভালো মনে হবে
তুমি যদি হও ভালো।
দারুণ পরিবেশ
শামীম খান যুবরাজ
ফুল-ফসলে ভরে থাকে দেশ
গাছগাছালি- দারুণ পরিবেশ
মিষ্টিমাখা পাখপাখালির সুর
নদী বেঁকে যায় সে বহুদূর।
মেঠোপথের খুব মায়াবী রূপ
শান্ত সকাল একদমই নিশ্চুপ
চাষির মুখে পল্লিগীতি- গান
রাখালিয়া অমোঘ বাঁশির টান।
খোলা মাঠে শিশুর ছোটাছুটি
পুকুর জলে ঘাই মারে সরপুঁটি
প্রকৃতিতে জাগে খুশির বান
এসব কিছু বাংলাদেশের প্রাণ।
উঠব গাছে
কাজল আক্তার নিশি
বন্ধু তোরা চল রে সবাই
আম পেকেছে আম
মুখ খানি আজ রঙ্গিন করবো
খেয়ে পাকা জাম।
গাছের ডালে খাচ্ছে যে দোল
পাকা পাকা লিচু
খাবি কে কে আয় ছুটে আয়
আমার পিছু পিছু।
লিচু পাড়বো আমও পাড়বো
উঠব না আগ ডালে
আগ ডালেতে উঠলে কিন্তু
হাত-পা ভাঙবে ফালে!
দাঁতে পোকা
রেজা কারিম
খোকা,
তোর দাঁতে কি বসত করে পোকা?
একটুখানি হাসি দিয়ে, ফিক
বলে,
ঠিক ধরেছো ঠিক
মুখে আমার পোকার খামার
পোকাগুলো বড্ড চামার
নয়তো মানবিক
দিনে রাতে দাঁত ও মাড়ি
করছে খেয়ে লিক।
কেমন লাগে তোর?
কেমন আবার
হয়নি ভাবার সময়
তবে
ব্যথায় যখন কুঁকড়ে উঠি
শক্ত করে হাতের মুঠি
মনটাতো চায় চিবিয়ে খাই
অমানুষের দল
এই বয়সেই নিচ্ছে কেড়ে
আমার কোলাহল
দাঁত হলো যে এই জীবনের
ঋদ্ধ শতদল।
মেঘের মতো ফুল
মাহমুদুল হাসান মুন্না
নদীর কূলে ঝিলের ধারে
মিষ্টি খুকির দৃষ্টি কাড়ে
মেঘের মতো ফুল,
ফুল ওরা নয়, ওরা যেন
দাদির পাকা চুল।
দাদি খোঁপার বাঁধন খোলে
দীঘল চুল হাওয়ায় দোলে
দেখতে লাগে বেশ,
ফুলগুলো নয়, দুলছে যেন
দাদির এলো কেশ।
এ ফুল যেন শিমুল তুলো
ঘাসের ওপর খানিক শুলো
একটু দিলো ঘুম,
বাতাস এসে দোলা দিলে
ওদের ওড়ার ধুম।
সমাধান
হামিদা আনজুমান
গরম ভীষণ, আগুন ঝরায়
সূর্য মামা দু'হাতে
মনটা ভাবে ডুব দিয়ে রই
বরফ পানির গুহাতে।
শীতল ছায়া নাই কোথাও
তপ্ত বাতাস বয়ে যায়
ঘরে বাইরে সমান গরম
চান্দি গরম হয়ে যায়।
ব্যস্ত সবাই নানান কাজে
কিন্তু গরম ছাড়ে না
দুহাত তোলে মোনাজাতে
আর যেন তা বাড়ে না।
গরম কেন চটলো এতো
কারণটা খুব কঠিন নয়
গাছ কেটে সব করলে সাবাড়
এমন কিছুই সইতে হয়।
বেশি করে বৃক্ষ রোপণ
আসবে তাতে সমাধান
এই ধরাতে রাখতে হবে
বাঁচার জন্য সবুজ প্রাণ।
বিপ্লবী কবি ফররুখ
মুহাম্মাদ শেখ মূসা
বিপ্লবী এক কবি যিনি
কাব্য-ছড়া লিখেন তিনি
উঠতো জেগে
সবার আগে
আমরা তারে সবাই চিনি।
তাঁর হাসিটা ফুলের মত
কথায় কথায়। মুক্তো শত
ঝরত চোখে
দেখত লোকে
ছুটেন কেমন অবিরত!
বাসতো ভালো সকল শিশু
সবার সাথে ছিলেন মিশু
দুঃখ পেলে
দুঠোঁট মেলে
হাসতো যেন হয়নি কিছু।
ফুলেল করি জগৎখানা
ওয়াহিদ আল হাসান
সুস্থ জীবন গড়তে গিয়ে
কতরকম চেষ্টা রাখি
পরকালীন শান্তি পেতে
কতটুকু সত্য মাখি!
ভুলে যেনো হয় না কভু
কালোর সাথে সখ্য
ভালোর পথে চলতে গিয়ে
রেখো দৃঢ় বক্ষ।
কান্নার পরে আসে হাসি
এমন কথা নয় অজানা
ধৈর্য নিয়ে চললে পরে
সুখের পাখি দেয় যে হানা।
যেমন কর্ম ফলটা তেমন
সেসব কথা সবার জানা
মন্দ ফেলে ভালো তুলে
ফুলেল করি জগৎখানা।
জ্ঞান
কোমল দাস
সিংহ মামা ডায়েট করে
হয়ে গেছে সরু,
তাই তো তাকে গুঁতা দিয়ে
ফেলে দিলো গরু।
শেয়াল শুধায় গরুর কাছে
কাকে গুঁতা দিলে?
চমকালো না পিলে!
ভয় কি মোটেও নাই?
এমন হলে এই বনে কি
থাকবে তোমার ঠাঁই?
এসব করো ক্যান?
বিবেক খুলে গরু তুমি
বাড়াও আরো জ্ঞান।
কাঠুরিয়া
আরিবা জান্নাত
কাঠুরিয়ার দুঃখ ভীষণ
দীর্ঘদিনের বসা,
গাছপালা কম তাই কাটে না
তাদের করুণ দশা।
আফসোসে মন কাঁদে এখন
নিজের অতীত ভুলে,
লাগায়নি গাছ কভু তারা
কাটত হেলেদুলে।
হুমকির মুখে পরিবেশ আজ
যাদের কর্মদোষে,
রোগ বালাই এ দূষণ জীবন
ক্ষণে ক্ষণে পোষে।