দাদুর বন্ধু নূপুর

মোঃ আব্দুর রহমান
বিকেল বেলা খেলতে যাওয়ার জন্য দৌড় শুরু করেও হঠাৎ থেমে গেলো নূপুর। ওর কাছে মনে হলো কেউ একজন বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। পিছনে তাকিয়ে দেখলো, ওর দাদু গ্রিলটা ধরে বাহিরে তাকিয়ে রয়েছে। কিন্তু এভাবেতো ওর দাদু দুপুরেও দাঁড়িয়ে ছিল! এমনকি সকালেও দাঁড়িয়ে ছিল! একদম চুপচাপ কোনো কথা নেই।
এবার এক দৌড়ে দাদুর কাছে গেলো। দাদু তোমার কি মন খারাপ?” দাদু মাথা নেড়ে নিষেধ করলো। আবার নূপুর বললো,চ্চা খাবে দাদু, মাকে এক কাপ চা দিতে বলি? সেটাও মাথা নেড়ে নিষেধ করলো। তাহলে কি হয়েছে একটু বলবে আমাকে।এবার দাদু বললো, আমার কিছুই হয়নি দাদুভাই। যাও তুমি খেলতে যাও। সন্ধ্যার আগে ঘরে ফিরে আসবে, তা না হলে মা বকবে কথাটা বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
নূপুর ওর বান্ধবী দোলার সাথে খেলতে চলে গেল। কিন্তু দোলা এখনও খেলতে আসেনি। কিছুটা চিন্তায় পড়ে গেলো নূপুর। মনটাও একটু খারাপ হলো। ঠিক সেই মুহূর্তে দোলা ওর দাদুর হাত ধরে হাজির হলো। দোলা হাসতে হাসতে বললো, আয় নূপুর পরিচয় করিয়ে দেই। উনি হচ্ছে আমার দাদুভাই অর্থাৎ, বন্ধুও বলতে পারিস। আজই গ্রাম থেকে এসেছে। আর দাদু ও হলো তোমার আর এক বন্ধু নূপুর।” নূপুর তাড়াহুড়ো করে সালাম করলো।
-জানিস নূপুর, দাদুর একা একা বাসায় মন খারাপ হতে পারে, তাই আমি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। তুই কি দাদুকে আনাতে মন খারাপ করলি। না মানে খুব ভালো করেছিস। তুই বরং দাদুকে নিয়ে একটু বস-আমি এখনি আসছি...।
নূপুর দ্রুত বাসায় ফিরে দেখলো-দাদু ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে! নূপুর দাদুর হাত ধরে বললো, চলো দাদু তুমি আমার সঙ্গে বাহিরে ঘুরতে যাবে এবং আজ থেকে তুমিও আমার বন্ধু।
দাদু প্রথমে যেতে রাজি না হলেও পরে নূপুরের কথায় রাজি না হয়ে পারলই না। পুরো বিকেলটা ঘুরে বেড়ালো দোলাদের সাথে। হাসতে হাসতে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলো। দাদু ও নূপুরের এমন হাসিখুশি মুখ দেখে নূপুরের বাবা-মা মনে শান্তি পেলো। ভাবলো, আজকের দিনটি সত্যি সার্থক।