কবিতা
ঈদ আনন্দ
সাজজাদ হোসাইন খান
পাপড়িতে ঝরে কারা টুপটাপ
ঝুপঝাপ
চুপচাপ নয়নে
চন্দ্রের খোলা মাঠে খুড়াখুড়ি বয়নে।
জোছনার মাটি মেখে হাসাহাসি
ঠাসাঠাসি
পাশাপাশি নামছে
হাওয়াদের ঘাটে ঘাটে নিরিবিলি থামছে।
বছরের জোড়া দিন ভিড়াভিড়ি
পিড়াপিড়ি
ছিড়াছিড়ি চলে যে
উড়ে খুশি আসমানে ঈদ তাকে বলে যে।
আসে ঈদ আনন্দপাখাতে
ঝলমল ফুর্তির ঝাঁকাতে।
পশুর হাট
শাহরিয়ার শাহাদাত
বাবার সাথে যাচ্ছি আমি
নানান খাবার খাচ্ছি আমি
বাপ বলে-আর ঘুরবা নি?
দেখলে চলো পশুর হাট
বসছে সেটা বসুরহাট
উপলক্ষ্য কুরবানি।
হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে
পৌঁছে গেলাম হাটে এসে।
দাঁড়িয়ে আছে গরু-মহিষ
সারি সারি কী দারুন ইস !
রঙেঢঙে বেশ
দু'শিং রাঙা, গলায় মালা
ঘাড়ে অনেক কেশ!
সামনে দেখি ষাঁড়ের পাল
সাদা কালো ধুসর লাল
শক্তি দেখায় ভালো
এমন তেজী ষাঁড় যদি চাও
পয়সা বেশি ঢালো ।
হাটের গরু কোনটা রাজা
কোন গরুটা মোটাতাজা
দেখছি হাটে ঘুরে
নানান রঙের গরু দেখে
মন হলো ফুরফুরে।
সোনা মাখা ঈদ
শাহীন খান
সোনা মাখা ঈদ এলোরে মিষ্টি মধুর হেসে
ঈদ এলোরে আলতা পায়ে গভীর ভালোবেসে।
সাজলো খোকা খুকিরা
গাইলো যে গান দুখিরা
রং ছড়ালো হাওয়ায় হাওয়ায় গঞ্জ গ্রামে দেশে।
ঈদ এলোরে টুপি মাথায় ঈদগাহেতে চলি
শত্রুমিত্র ভুলে গিয়ে মনের কথা বলি
কেউ করে না আজ মানা
বাড়ি বাড়ি খাই খানা
বুকের বাগে প্রীতির গাছে ফুটলো হাজার কলি।
কুরবানি
মাহমুদ সালিম
শুদ্ধ মনে রুদ্ধ করো
দিলটা করো সাফ
কুরবানিতে মুক্তি পাবে
করবে প্রভু মাফ।
কুরবানি দাও মনের পশুর
হিংসা করো দূর
পরবে ঝরে খুশবুর নেকি
বাড়বে ঈমান নূর।
তোমার মনে কী আছে ভাই
দেখেন প্রভু নিজে
কবুল হলে হাসবে তুমি
শান্তি পাবে কি যে।
তাই তো বলি খোদার রাহে
কুরবানি দাও হেসে
ভালোর জন্য আলো আসুক
বলবে মানুষ এসে।
ঈদের জামা
জাহিদুল ইসলাম
ঈদের জামা কিনবো বলে
গেলাম বাবার সাথে
কাছেই ছিল একটা দোকান
অনেক জামা তাতে।
একটি জামা আলতা রাঙা
আরেকটি বেশ কালো
সবুজ হলুদ সাদাও ছিল
সবগুলোই তো ভালো।
কোনটা ছেড়ে কোনটা নিবো
পরেছি ভাবনায়
একটি জামা গোলাপ রাঙা
আমাকে মানায়।
কি যে মজা সেই জামাটাই
বাবা দিল কিনে
সেই জামাটা পরে থাকি
রাতে কিংবা দিনে।
কোরবানির ঈদ
জাহাঙ্গীর চৌধুরী
ঈদ এসেছে ঈদ এসেছে
বান উঠেছে খুশির
এমন খোশে সবাই এখন
চোখেমুখে অস্থির।
খোকাখুকুর ঈদ আনন্দ
নিদ নেই তাদের চোখে
পোশাক পরে ভোর বেলাতে
নামাজ পড়বে সুখে।
আল্লার খোশে কোরবান দিবে
পশু জবাই করে
গোস্ত খাবে সবাই মিলে
ভাগাভাগি করে।।
ঈদের চাঁদ
শ্যামল বণিক অঞ্জন
ঈদের চাঁদে দারুণ খুশি
মুখে হাসি চড়া যে!
এই চাঁদেরই আলোয় ভাসে
বিশ্ব ভুবন ধরা যে।
দিনের শেষে আকাশ কোণে
চাঁদটা যখন উঠেরে,
হৃদয় কানন জুড়ে তখন
ফুলও রঙিন ফুটেরে!
ঈদের খুশি ঘরে ঘরে
দেয় ছড়িয়ে সুখের রেশ!
চাঁদ যেন ভাই যায় বলে যায়
করো এবার বিভেদ শেষ।
ঈদুল আযহা
মেশকাতুন নাহার
ঈদুল আযহা এলো আবার
একটি বছর পরে,
মাংস খাবে ধনী গরিব
ভাগাভাগি করে।
পশু কিনবে হালাল টাকায়
আত্মশুদ্ধির তরে,
সঠিক কায়দায় মাংস বিলাও
অসহায়দের ঘরে।
কোরবানি ঈদ এমন উৎসব
ভরে সবার হাঁড়ি,
রান্না হয় যে স্বাদের মাংস
প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি,
ভেদাভেদ সব ভুলতে পারলে
আসে মনে শান্তি,
শপথ করি এসো সবাই
তাড়াই সকল ভ্রান্তি।
খোকার ঈদ
আশতাব হোসেন
ধুম পড়েছে কেনাকাটার
সামনে খুশির ঈদ,
আগে থেকেই খোকন সোনা
ধরছে বড্ড জিদ।
নতুন জামা কিনবে খোকা
সাথে নতুন টুপি,
এই কথা তার দিদার কাছে
বলেছ সে চুপি।
নতুন জামা নতুন টুপি
পাবে রিমোট গাড়ি
দিদা বললো বাবার সাথে
করবে না আর আড়ি।
খোকন সোনা খুশি হয়ে
গলা ধরে দিদার,
তুমি থাকতে আমার আবার
চিন্তা কীসের আর!
ঈদের চাঁদ
জাকির শায়েরী
চাঁদ উঠেছে দূর গগনে
চাঁদ উঠেছে ওই
ঈদেরই চাঁদ দিলো উঁকি
আনন্দে হইচই।
ঈদের চাঁদ ঈদের চাঁদ
উঠলো হেসে যেই
ঈদের খুশি যায় ছড়িয়ে
যার সীমানা নেই।
ঈদের খুশি সবার ঘরে
বয় আনন্দের ঢেউ
বাদশা ফকির এক কাতারে
নাই ভেদাভেদ কেউ।
ঈদে
শাহ আলম বিল্লাল
এই ঈদে লাল চুড়ি
আর দেবে কিতা?
গোল নয় মা মণি
সাথে দেবো ফিতা।
আরো দেবো জামা জুতো
কচকচে মানি
ভেরি গুড বাব্বা
জানি জানি জানি।
তুমি যে আমাকে
কর খুব লাইক
ভাইয়া শুনলেই
করবেই স্ট্রাইক।
এই ঈদে
সাইদুল ইসলাম সাইদ
আম্মু দিবে চুড়ি মালা
আব্বু দিবে টাকা
ঘুরে ঘুরে মজা খাবো
সঙ্গে আছে কাকা।
ভাইয়া দিবে মেহেদি ও
আপা কানের দুল
মনের মতো আঁকবো হাতে
নানান রঙের ফুল।
নানা নানি দাদা দাদি
তাঁরা কিছু দিবে
মায়ের কাছে বাবার কাছে
কিছু তারা নিবে।
মামা দিবে জামা কাপড়
মামি দিবে পরে
ফুফা ফুফি বলে আমায়
কিনে রাখছি ঘরে।
বনের ঈদ
সাইদুল হাসান
কোকিল ডাকে শুনতে পেলুম
ঈদের খুশির গান
দোয়েল ঘুঘু ময়না টিয়ে
সুরেতে দেয় টান।
হালুম ডেকে ঈদের কথা
ছড়িয়ে দেয় বাঘ
‘বনের যত পশুপাখি
ঈদআনন্দে জাগ’।
হরিণ জিরাফ মিছিল ধরে
বনের মাঝে উচ্চঃস্বরে
পিটায় ঢাকের ঢোল
হাতিছানা নেচে ওঠে
আওয়াজ জোরে তোল।
খোকার ঈদ
নকুল শর্ম্মা
খোকা পড়বে ঈদের নামাজ
ময়দানেতে গিয়ে,
সঙ্গে যাবে দাদু যে তার
ছাতা মাথায় দিয়ে।
পায়জামাটা একটু বড়
দুঃখ নেই তার তাতে,
পাঞ্জাবি আর টুপি মাথায়
যাচ্ছে সবার সাথে।
একসারিতে দাদু নাতি
নামাজ আদায় করে,
ঈদের খুশির বইছে জোয়ার
সবার ঘরে ঘরে।
ঈদ
মুহিতুল ইসলাম মুন্না
চাঁদ উঠেছে ফুল ফুটেছে
কাল যে হবে ঈদ,
খুশির জোয়ার বয়ছে ধরায়
নেইকো চোখে নিদ।
ধনী গরিব বাদশা ফকির
সব ভেদাভেদ ভুলি,
ঈদের নামাজ শেষে সবে
করব কোলাকুলি।
সবার গায়ে রঙিন পোশাক
থাকবে ঈদের দিন,
গরু জবাই হবে আহা
তাক ধিনা ধিন ধিন।