রবিবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

কবিতা

শ্রাবণে

শঙ্খশুভ্র পাত্র

থমথমে মেঘ আকাশ জুড়ে

এই ঘনঘোর শ্রাবণে,

কে যেন কয়, ‘ঘরেই কেন

একবার তুই যা বনে। '

 

ভিজে-একশা গাছপালারা

এক্কেবারে শান্ত,

সজল হাওয়ায় শিউরে ওঠে

অনেক দূরের প্রান্ত। 

 

চতুর্দিকে ঝাপসা ছবি

বাজ-বিজলির যুদ্ধ,

তুমিও বাপু এসব দেখে

হচ্ছ কি খুব ক্ষুব্ধ?

 

জানলা-ধারে বসে আছি

থমথমে মেঘ শ্রাবণে,

আবেগে মন ভাসছে, আহা,

বৃষ্টিধারা পাবনে। 

 

গাঁয়ের শোভা 

এম.আবু বকর সিদ্দিক 

ছুটির দিনে মাটির টানে 

ছুটে এলাম গাঁয়ে,

সবুজ ঘাসের মেঠো পথে

হাঁটছি নাঙ্গা পায়ে।

 

কলসি নিয়ে গাঁয়ের বধূ 

যাচ্ছে পুকুর ঘাটে,

ক্ষেতের আনাজ মাথায় করে

চাষি যাচ্ছে হাটে।

 

বিলে-ঝিলে শাপলা শালুক 

পাপড়ি মেলে হাসে,

কোমল রোদে শিশু-কিশোর 

খেলছে ঝিলের পাশে।

 

ক্ষেত খামারে শস্য নাচে

বটের ডালে পাখি,

¯েœহমাখা গাঁয়ের শোভা 

মুগ্ধ করে আঁখি।

 

খোকার প্রার্থনা 

জাকির শায়েরী

খোকা আমার প্রভুর তরে

করে মোনাজাত 

ক্ষমা করো পিতা-মাতার 

সকল অপরাধ। 

 

ক্ষমা করো আমায় তুমি

রহিম রহমান

তোমার কৃপায় বেঁচে আছি

তুমি মহীয়ান। 

 

ধুয়েমুছে সাফ করে দাও

মনের কালি দাগ

সবার প্রতি রহম তোমার

সমান করো ভাগ।

 

নতুন বই

শেখ সোহেল রেজা

পাঠশালায় যাবে দিনা

হাতে নতুন বই,

দেখতে এলো ময়না, টিয়া

পাড়ার সবাই কই।

 

নতুন বই পেয়ে এখন 

দিনা বেজায় খুশি,

পড়তে বসে দিনার সাথে

বিড়াল ছানা পুষি।

 

নতুন বই নিয়ে এখন 

সারাবেলা কাটে,

দুষ্টুমি আর করে না সে

মন দিয়েছে পাঠে।

 

বাদল দিনে

জাহানারা নাসরিন

টাপুরটুপুর বৃষ্টি নূপুর 

বাজছে টিনের চালে,

ডোবার পাড়ে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর

চলছে তালে তালে।

 

ঝোপের ধারে ডাহুক ছানা 

গাইছে মধুর সুরে,

পাল তুলেছে নায়ের মাঝি

যাবে বহুদূরে।

 

কদম, কেয়া, জুঁই, কামিনী

ফুটছে থোকা থোকা,

মনানন্দে বৃষ্টি মাখে

ফুলপাখি আর খোকা।

 

উঠোন জলে ডুবসাঁতারে

চলছে হাঁসের খেলা,

পুঁই মাচাতে বসছে দেখ

গল্পকথার মেলা।

 

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ে

জল থৈ থৈ করে,

মেঘ গুড় গুড় মাদল বাজে 

সৃষ্টি যেন নড়ে।

 

উড়ি

রানা হোসেন 

সারার ঘরে কবুতর এক 

সাদা কালো লেজ, 

গম খেয়ে সে বসে থাকে 

ভীষণ রকম তেজ। 

 

তাইনা দেখে সারা, এশা  

মিষ্টি মিষ্টি হাসে, 

মনের সুখে ঘরের মাঝে 

তারা দু’জন ভাসে। 

 

জানলা দিয়ে আকাশ দেখে 

উড়ছে রঙিন ঘুড়ি, 

ইচ্ছে করে সারা, এশা’র

ঘুড়ির সাথে উড়ি।

 

 

বর্ষাকালের ফুল

মাহমুদ আরিফ

বৃষ্টি যখন বলতে থাকে

লতাপাতা ছুঁই 

ঠিক তখনই মুচকি হাসে

কদম, বেলি, জুঁই।

 

বৃষ্টি যখন আকাশ থেকে

বিলের জলে নামে

সজীবতা ফিরে আসে

গাঁয়ের ডানে বামে।

 

বিলের জলে হাসতে থাকে

শাপলা-শালুক ফুল

বর্ষাকালে গন্ধরাজের

হয় না কোনো তুল।

 

স্বপ্ন জয়

মিজান ইবনে মোবারক

স্বপ্ন ছাড়া হয় না বড়ো

স্বপ্ন বড়ো বল,

স্বপ্ন দেখে জ্ঞানী মানুষ

ভবিষ্যতের ফল।

 

স্বপ্নের সমান মানুষ বড়ো

স্বপ্ন দেখতে হয়,

স্বপ্ন দেখতে সাহস লাগে

করতে হয় না ভয়।

 

স্বপ্ন ছাড়া হয় না পূরণ

লক্ষ্য সুখের ঘর,

স্বপ্ন দেখে অগ্রসরে

স্বপ্ন জয়ের ঝড়।

 

স্বপ্ন যাদের মনের নেশা

ভুবন করে লয়,

স্বপ্নচাষি মানুষ তারা

স্বপ্ন করে জয়।

 

 

আজানের সুর

সরোয়ার রান

খুব ভোরে যেই শুনি আজানের সুর 

দুই কানে লাগে আহা বড় সুমধুর। 

 

মোরগ আর পাখিরাও সুরে সুরে ডাকে

উঠে যায় ঘুম থেকে যারা ঘুমে থাকে

 

দাদি খুব রেগে যায় জাগো কেন আগে

চেয়ে দেখো বর্ণিল ফুল ফুটে বাগে। 

 

ভোরবেলা আবহাওয়া খুব ভালো থাকে

শরীর ও মনটাকে খুব ভালো রাখে।

 

স্বর্গের দুয়ার তো সকালেই খোলে

কান পেতে শুনে নাও পাখিদের বোলে। 

 

বুক ভরে শ্বাস নেব সবুজের মাঝে

জাগরণী সংগীত কানে শুধু বাজে ।

 

থাকব না ঘরে আজ এইভাবে বন্দি

প্রকৃতির সাথে দাদি, হয়ে গেছে সন্ধি।

 

আড়ি

গোলাম আযম 

ডিঙি নায়ে চড়ে খোকা

যাবে মামার বাড়ি,

মায়ের সাথে অভিমানে

তাই ধরেছে আড়ি।

 

মুখখানা তার ভার দেখে মা

কপালে দেয় চুম,

খিলখিলিয়ে হাসে খোকা

পেয়ে নরম উম।

 

ঝড় বাদলের সময় হলে

আম কুড়াতে যাবে,

কুড়ানো আম সবাই মিলে 

মজা করে খাবে।

 

মায়ের দোয়া

মুনির শফিক 

মা জননী সুখের খনি 

জগত সেরা ধন

মা যে আমার এক জনমের

স্বর্গীয় যাপন।

 

মায়ের সেবা করব আমি

বাসবো মাকে ভালো

মায়ের দোয়ায় জীবন হবে 

চাঁদের মতো আলো।

 

মা যে আমার চোখের মণি

মা যে আমার জান

মা গো তুমি সবার সেরা

মহান রবের দান।

 

প্রাণের প্রিয়জন

ইমামউদ্দীন ইমন

রাসূল আমার এই ধরাতে

প্রাণের প্রিয়জন,

তোমায় পেতে মনটা সদা

করে আয়োজন।

 

তোমার শানে দুরুদ পড়ি

সকাল-সন্ধা ভোর,

তোমার গুণে যায় কেটে যায়

মনের যত ঘোর।

 

ব্যঙ্গ তোমায় করে যারা

হিংস্র তাঁদের মন,

মানুষ তারা নয় কখনও

পশু এমন জন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ