শুক্রবার ০১ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

কবিতা

দুই ভাই 

জাকির আজাদ 

 

পথের ছেলে মমিন মবিন 

তাদের মা ও বাপ নাই, 

ছোট খাটো এই শরীরে 

কঠিন কোনো পাপ নাই। 

রোজই ডাউন হচ্ছে তারা 

কোনোভাবে আপ নাই, 

গাড়ি বাড়ি ধনী হওয়ার 

মনে কোনো চাপ নাই। 

 

ভিক্ষা থেকে আসে খাবার 

আর কোনোই ধাপ নাই, 

শীত গরমে বারো মাসই 

গায় কাপড়ের তাপ নাই। 

অভাব করে নিত্য শাসন 

কোনো প্রকার মাপ নাই, 

তবু তারা বেঁচে আছে 

মুখে ক্লান্তির ছাপ নাই। 

 

মনে পড়ে

সাঈদুর রহমান লিটন 

 

মাগো তোমায় মনে পড়ে

সকাল, দুপুর, রাতে,

দুধ মাখা ভাত খেতাম মাগো

যাদুর ছোঁয়া হাতে।

 

খাবার খেতে করতাম যদি

একটুখানি মানা,

কী হয়েছে ভেবে ভেবে

চোখ করিতে কানা।

 

একটুখানি আঘাত পেলে

মাগো বলে ডাকি,

মাগো তুমি চলে গেছো

এখন একলা থাকি।

 

তোমার ছোঁয়া তোমার মায়া

চোখের তারায় ভাসে,

তোমার স্মৃতি নাড়া দিলে

কান্না চলে আসে।

 

যেথায় তুমি থাকো মাগো

থেকো তুমি সুখে,

অশ্রু চোখে খুঁজে বেড়াই

কষ্ট স্মৃতি বুকে।

 

শরত এলে

মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাহারী

চিকচিকে রোদ স্বচ্ছ আকাশ

শরত ঋতুর কাল,

নদীর বুকে রঙ বেরঙের

নায়ে ওড়ে পাল।

 

হঠাৎ মেঘে আকাশ ঢাকে

সূর্য লুকায় মুখ,

রোদ হারিয়ে বৃষ্টি নামে

মোচড় মারে বুক।

 

খানিক পরে যায় যে দেখা

উদার আকাশ নীল,

বুকের ভিতর ওড়ে তখন

স্বপ্ন ডানা চিল।

 

হঠাৎ বৃষ্টি হঠাৎ রোদ্দুর

হঠাৎ মেঘে ধায়,

শরত এলে কখন কীযে

বুঝে ওঠা দায়।

 

মনোযোগ

আরমান জিহাদ 

এক মুহূর্তে বদলে যেতে

পারে সকল কিছু 

কিসের নেশায় পাগল হয়ে

ছুটছ কিসের পিছু?

 

নাই ভরসা বেঁচে থাকার

এই দুনিয়ার মাঝে

তবু তুমি ব্যস্ত থাকো

কিসে সকাল সাঁঝে?

 

ভাবছ নাকি মরার পরে

কেমন দশা হবে

তিন টুকরো কাপড় সমেত

একলা পরে রবে।

 

দাও মনোযোগ সকল সময়

ভালো ভালো কর্মে

সত্যবাদী থেকে জীবন

চালাও শান্তির ধর্মে।

 

প্রজাপতি

টি এইচ মাহির

প্রজাপতির রঙ্গিন পাখা

রংবেরঙ্গের ছোপ,

ফুল বাগানে ঘুরে বেড়ায়

ফুলে গড়ে খোপ।

 

রঙ্গিন ফুলে দুলে দুলে

ডানা মেলে উড়ে,

খোকার আঁকা স্বপ্নগুলো

যাচ্ছে ডানায় চড়ে।

 

মায়ের ছড়ার চালে 

রিতা ফারিয়া রিচি

জিদ ধরেছে একটা শিশু

হাসবে না সে আর,

সোনামুখে ফোটায় হাসি

সাধ্য আছে কার?

 

আব্বু ডাকে সোনামণি

মায়ে ডাকে জান,

কিন্তু শিশুর ভাঙছে না যে

মোটেই অভিমান। 

 

পড়শি এসে একে একে

হয় যে জড়ো কত,

তবু শিশুর ভাবখানা যে

আছে আগের মতো। 

 

স্বরলিপির বইটা নিয়ে

মুখ ফুলিয়ে থাকে,

ওকে নিয়ে সবাই যেন

পড়েছে বিপাকে। 

 

অসুখ-বিসুখ করছে নাকি

ভাবছে বাবা-মায়,

আপাতত তারা যেন

খুবই নিরুপায়। 

 

এমবিবিএস-এফসিপিএস

আসলো দুজন ঘরে,

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা

ব্যস্ত হয়ে পড়ে। 

 

কোনোভাবেই হচ্ছে না যে

শিশুর অসুখ ভালো,

ডাক্তারেরা হেরে গেলো

মুখটা করে কালো। 

 

মায়ে এবার নড়েচড়ে

শিশুর কাছে বসে,

মুখে মুখে ছড়ার জগত

ইচ্ছেমতো চষে। 

 

এদিক ওদিক তাকায় শিশু

টোল পড়া ওই গালে,

এতক্ষণে হাসলো যেন

মায়ের ছড়ার চালে!

 

শরতের আকাশে

সংগ্রাম সাহা

ঝঝমঝমিয়ে আকাশ থেকে

বৃষ্টি পড়ে যক্ষনই

মেঘের কোণে সূর্য্যি মামা

লুকিয়ে পড়ে তক্ষনই। 

 

আবার যখন মেঘ সরে

সূর্য্যি মামা হাসে

লুকোচুরির খেলা চলে

শরতের আকাশে। 

 

রঙিন শরৎ

শাহরিয়ার শাহাদাত 

হাওয়ার নাচন কী কুড়মুড়ে 

কামার দিঘির দু'ধার জুড়ে 

নরম কাশের গাল,

বৃষ্টি আধো; কোথায় হারায়–

সূর্য্যি বুঝি রয় পাহারায়?

আসলো শরৎকাল! 

 

হাতছানি দেয় আকাশ বাড়ি

জড়িয়ে নিলো নীলাভ শাড়ি

শুভ্র মেঘের পাল, 

যাচ্ছে কোথায় মেঘের পালক?

মন উঠোনে আঁকছে বালক

রঙিন শরৎকাল ! 

 

রোদকুঁড়ি রোদ মাখায় আদর

সবুজ পাতায় ক্লান্ত ভাদর

পড়ছে পাকা তাল,

মন ছুটে যায় শিউলি তলে

দুপুর ঝিঁমায় যে অঞ্চলে

নামলো শরৎকাল ! 

 

ঝির-ঝির-ঝির শীতল কাঁপন 

জোছনা জরি করলো আপন

রাত্রি টালমাটাল, 

ঠিকরে পড়ে চাঁদের আলো

শিশির বনে ঘুম পাড়ালো

এইতো শরৎকাল! 

 

পাখির মিছিল

গিয়াস হায়দার

পাখির মিছিল আকাশ জুড়ে

করছে কলরব

বনদস্যুর বৃক্ষ নিধন

উজার করে সব।

 

প্রতিবাদে আকাশ জুড়ে

পাখির মিছিল চলে

মনের ব্যথা স্রষ্টার কাছে

প্রাণ খুলে যায় বলে।

 

ডালে ডালে পাখির বাসা

আছে কতো ছানা

বৃক্ষ কেটে করতে উজার

করছে পাখি মানা।

 

কাঁদছে পাখি আকাশ জুড়ে

জানায় মনের কথা

বৃক্ষ নিধন বন্ধ করে

ঘুচাও পাখির ব্যথা।

 

আমাদের গাঁও

মিজানুর রহমান

সবুজেতে ঘেরা দেখি

আমাদের গাঁও

জেলেদের সারিসারি

আছে ডিঙি নাও।

 

রাখালের সুর তোলা

মধুময় বাঁশি

পাখিদের কলতান

খুব ভালোবাসি।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ