রবিবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
Online Edition

ইসরাইলের হামলায় একদিনে নিহত ৭০ ফিলিস্তিনী

সংগ্রাম ডেস্ক : গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রোববার ইসরাইলী বিমান হামলায় অন্তত ৭০ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)। বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা, এএফপি, এপি, মিডল ইস্ট আই।

সংস্থাটি জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। সেখানে শিশুসহ কয়েক ডজন রোগীকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

ইসরাইলের এ হামলায় আরও ১২২ জন আহত হয়েছে। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানায়, অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। 

এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলী এক সেনার মৃত্যুদ- কার্যকর ও দুই বিদেশীকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ করেছে ইসরাইল। চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের মাঝে ইসরাইল রোববার এ অভিযোগ করেছে।

প্রসঙ্গত, ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ফিলিস্তিনী নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। 

 

ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল ঘেরাও করে হামলায় নিহত ১২

গাজার উত্তরাঞ্চলে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ইসরাইলের বোমা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। গাজার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহতের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসক ও রোগী আছেন।

গাজার উত্তরাঞ্চলে বড় হাসপাতালগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গতকাল রোববার কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা না দিয়ে ইসরাইলী বাহিনী ট্যাংক নিয়ে হাসপাতালটি ঘিরে ফেলে এবং হামলা চালায়। ইসরাইলী ট্যাংক এখনো হাসপাতালের চারপাশ ঘিরে রেখেছে।

গাজায় নিযুক্ত আল-জাজিরা প্রতিনিধি সাফওয়াত আল কাহলুত বলেছেন, মনে হচ্ছে আল-শিফা হাসপাতালে যা ঘটেছে ইসরাইলী বাহিনী তারই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে যাচ্ছে এবার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে। তারা ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালটিও দখল করে নিতে পারে।

হামলায় হাসপাতালটির জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বোমা হামলা চলার মধ্যে মুঠোফোনের আলো ব্যবহার করে চিকিৎসাকর্মীরা রোগীদের অস্ত্রোপচার করতে বাধ্য হয়েছেন।

 

গাজায় আরও দুই ইসরাইলী সেনা খতম

ইসরাইলী সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে লড়াইয়ে তাদের আরও দুই সেনা নিহত হয়েছে।

তাদের নাম ইয়েনন তামির ও দভির বারাজানি বয়স ২০ বছর।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৮৭ জন ইসরাইলী সৈন্য নিহত হয়েছে।

৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অনবরত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইলী বাহিনী। 

 

রাতভর ইসরাইলী হামলায় ৬ সাংবাদিক নিহত 

ফিলিস্তিনের গণমাধ্যম বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা এমএডিএ, ফিলিস্তিনী প্রেস সিন্ডিকেট একথা জানিয়েছে। তারা জানায়, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ছয় সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে গাজায় নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার অতিক্রম করেছে।

ফিলিস্তিনী ওই দুই সংস্থার তথ্য ও হামলার ভিডিও পর্যালোচনা করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাও গাজায় ছয় সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীর প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছে।

 

গাজায় ইসরাইলী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৩ হাজারে পৌঁছেছে। 

গতকাল রোববার গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় এ তথ্য জানায়। তারা আরও জানায়, নিহত ফিলিস্তিনীদের মধ্যে ৫ হাজার ৫০০টির বেশি শিশু রয়েছে। আর নারী ৩ হাজার ৫০০ জন। 

গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উপত্যকায় আহত ফিলিস্তিনীদের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত মানুষের মধ্যে ৭৫ শতাংশের বেশি শিশু ও নারী। 

গাজা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের বেশির ভাগই ইসরাইলী হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের হামলায় ৪৩ হাজারের বেশি আবাসন ইউনিট পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আবাসন ইউনিটের সংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার। এর মানে গাজা উপত্যকার ৬০ শতাংশ আবাসিক ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

গাজায় সংঘাত বন্ধে চীনের শরণাপন্ন আরব নেতারা

গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিম ও আরব দেশের নেতারা। সেই সঙ্গে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর বিষয়ে যেন কোনও বাধা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে মুখ খুলেছেন মুসলিম দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সোমবার চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইয়ের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তারা।

ওআইসি ও আরব লীগের সম্মেলনের পর চীনে সমবেত হয়েছেন আরব দেশের নেতারা। সৌদি আরব, জর্দান, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিস্তিন এবং অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক সহযোগী সংস্থার কর্মকর্তারা এ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। 

সম্প্রতি সৌদি আরবের রিয়াদে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে গাজা ইস্যুতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান মুসলিম নেতারা। সেই সঙ্গে ইসরাইল যা করছে তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলেন আরব দেশের সেসব নেতারা।

 

গাজায় মানবিক বিপর্যয় থামাতে বিশ্বকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান চীনের

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ‘মানবিক বিপর্যয়’ থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি। গতকাল সোমবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের তীব্রতা কমানোর লক্ষ্যে আলোচনার জন্য ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, সৌদি আরব ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতিনিধিরা বেইজিংয়ে অবস্থান করছেন।

প্রতিনিধিদলের মধ্যে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিবও আছেন।

বৈঠকে দেওয়া উদ্বোধনী বক্তব্যে কূটনীতিকদের উদ্দেশে ওয়াং বলেন, ‘দ্রুত গাজা পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং যত দ্রুত সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’

গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে ওয়াং বলেছেন, বিশ্বের সব দেশে গাজা পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে। এ সংঘাত যেন ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ঐতিহাসিকভাবেই চীন ফিলিস্তিনীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ক্ষেত্রে তারা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে।

আরব দেশগুলোর কূটনীতিকদের ওয়াং বলেন, ‘আরব ও মুসলিম দেশগুলোর ভালো বন্ধু ও ভাই বেইজিং। আমরা সব সময় আরব ও মুসলিম দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থকে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছি। এ সংঘাতে ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতার পক্ষে চীন সুদৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।’

যুদ্ধের নতুন ফ্রন্ট খোলার হুঁশিয়ারি ইরানের

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। দখলদার বাহিনীর নৃশংস অভিযানে সেখানে ভয়ংকর মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। গোটা বিশ্বের আহ্বান উপেক্ষা করে বেসামরিক লোকদের ওপর নির্বিচারে সমন্বিত (জল, স্থল ও আকাশ পথ) হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলী বাহিনী। 

এ অবস্থায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধফ্রন্ট খোলার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা এবং সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইরান’স রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) সাবেক প্রধান মোহসিন রেজায়ি এ ঘোষণা দিয়েছেন।

ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করল তুরস্ক-মালয়েশিয়া

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ফিলিস্তিনীদের পাশে দাঁড়িয়েছে কয়েকটি দেশ। তাদের মধ্য অন্যতম দুটি দেশ হলো তুরস্ক ও মালয়েশিয়া। গাজায় যুদ্ধ বন্ধে দুই দেশের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এবার তুরস্ক ও মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনের গাজার শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশ দুটির সরকার। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার কারণে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ