রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

দেশে বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে থাকা মানুষের ৯০ শতাংশই গ্রামের

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের গ্রামের ৫১ শতাংশের বেশি লোক বিদ্যুৎ-সুবিধা পায়। আর শহরের ৮৪ শতাংশ মানুষ এই সুবিধা পায়। আর যারা বিদ্যুৎ সুবিধা পায় না, তাদের ৯০ শতাংশই গ্রামের বাসিন্দা। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, যা এশিয়ার নয়টি স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মধ্যে সবচেয়ে কম।
ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড এন্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) ‘এলডিসি ২০১৭’ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল বুধবার একযোগে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এদিন সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আঙ্কটাডের পক্ষে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অনুষ্ঠানের প্রতিবেদনে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ।
আঙ্কটাডের এবারের প্রতিবেদনের বিষয় হলো রূপান্তরমুখী জ্বালানি প্রাপ্যতা। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ২০১৪ সালের বিদ্যুৎ-সুবিধার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। তবে সিপিডি বলছে, গত তিন বছরে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার সুবিধা নিশ্চিত করতে এশিয়ার নেপাল ও ভুটান বেশ এগিয়ে আছে। তবে এলডিসিগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর সাড়ে তিন গুণ হারে বেশি মানুষকে বিদ্যুৎ-সুবিধা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশকে প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ-সংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে এলডিসিগুলোর জন্য চারটি সুপারিশ করেছে আঙ্কটাড। এগুলো হলো শক্তিশালী বিদ্যুৎ-কাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সুশাসন ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা, উন্নয়নের কৌশল হিসেবে জ্বালানি খাতকে প্রাধান্য দেয়া এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা নেয়া।
অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালে এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালে যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার আকাক্সক্ষা রয়েছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতটিকে বিবেচনা করতে হবে। কেননা, জ্বালানি খাতে সঙ্গে তিনটি বিষয় সম্পৃক্ত। এগুলো হলো অর্থনৈতিক রূপান্তর, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য। জ্বালানি উৎপাদন হতে হবে সুলভ মূল্যে, সুশাসনের সঙ্গে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এ দেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়ন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ যেমন লাগবে, তেমনি বিদেশি বিনিয়োগও চাই। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তাও দরকার।
প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের ৫৩ শতাংশ কোম্পানি মালিক বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রাপ্যতাই তাদের প্রধান সমস্যা। কম্বোডিয়ার ৬ শতাংশ ব্যবসায়ী এই কথা বলেছেন। আর নেপালের মাত্র ১২ শতাংশ ব্যবসায়ীর এই মত দিয়েছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ