শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

জনগণ যদি শুধু ভোট দিতে পারে দেখবেন ভোটের বাক্সে বিপ্লব ঘটে যাবে

খুলনা : ১০ মার্চের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে বিএনপির উদ্যোগে প্রেস ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান

খুলনা অফিস : নিরপেক্ষভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপির গণজোয়ারের প্রমাণ মিলবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে বিএনপির নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অসুবিধা নেই, সব নেতাকে গ্রেফতার করুন। বিএনপির কর্মী ও জনতা মুক্ত থাকলেই চলবে। একবার শুধু নিরপেক্ষ নির্বাচন করুন। তাহলেই দুঃশাসনের অবসান হবে। বিএনপির পক্ষে গণজাগণের প্রমাণ মিলবে।’ গতকাল শুক্রবার খুলনায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন । 

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার খুলনায় জনসভা করার অনুমতি না পাওয়া ও মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে এই প্রেস ব্রিফিং করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের মিছিল করতে বাধা দেয়া হয়। জনসভা করতে বাধা দেয়া হয়। স্লোগান দিতে বাধা দেয়া হয়। লিফলেট বিলি করতে গেলে গ্রেফতার করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আপনাদের উপর নির্ভর করি। এক সময় বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছিল। সেই স্বাধীনতা জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। 

নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটি দল সরকারি টাকায় গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে, হেলিকপ্টারে করে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী জনসভা করে বেড়াচ্ছে। আরেক দলের নেতা কারাগারে আবদ্ধ। তার দলের নেতাকর্মীরা নেত্রীর মুক্তি এবং একটি অংশগ্রহণ ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধমূলক একটা সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। এতকিছুর পরেও আমরা বলতে চাই, যত পারেন আমাদের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করেন। শুধুমাত্র নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন দিন। জনগণ যদি শুধু ভোট দিতে পারে দেখবেন ভোটের বাক্সে বিপ্লব ঘটে যাবে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘এখন চলার পথে দেখছি রাস্তাঘাটের ওপর নৌকা উঠেছে, মোড়ে মোড়ে নৌকা টানিয়ে রাখা হয়েছে। আজকাল নদী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নদীতে পানি নেই। পদ্মা নদীতে পানি নেই। প্রমত্তা তিস্তাতেও পানি নেই। নদীতে নৌকা চলার অবস্থা নেই। সেই নৌকা এখন আকাশে উঠেছে।’ 

ব্রিফিংয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আন্দোলনে মাঠে নামলে নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে। মিছিল করতে দেয়া হচ্ছে না, সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। ধরপাকড় চালিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। তল্লাশির নামে বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা গণতন্ত্রের ধারা নয়।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, গত মাসের ২৬ তারিখে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আমরা ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০ মার্চের শহীদ হাদিস পার্কের জনসভা করার অনুমতি নিই। এখন শুনছি আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন সেখানে সভা ডেকেছে। তারা পায়ে পা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এখন পুলিশ বলছে, হাদিস পার্ক কেন আশেপাশের রাস্তাতেও সমাবেশ করা যাবে না। তারা আসলে ১০ তারিখে সভা করতে চায় নাই। তারা আসলে আমাদের সমাবেশ নষ্ট করতে চেয়েছে। তারা সরকারে আছে, তাই সরকারের সহযোগিতায় এই অপকৌশল কাজে লাগিয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।

তিনি বলেন, ‘খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় জনসভা লোকারণ্যে পরিণত হবে। হাদিস পার্কে অনুমতি পাইনি, আমরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তাতেই জনসভা করবো। বিভাগের প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা জনসভায় অংশ নেবেন। গলিপথ জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’ এ জনসভাকে বাধাগ্রস্ত করতেই মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপরও বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে জনসভা করতে চায় জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান হুঁশিয়ারি দেন, নেতাকর্মীদের জনসভায় আসার মিছিলে যেন কোনও বাধা দেয়া না হয়।

ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খানসহ স্থানীয় নেতারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ