একজন প্রেসিডেন্ট প্রসঙ্গ
পৃথিবীর বড় বড় দেশের নেতাদের সম্পর্কে সেইসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মন্তব্য শুনলে অবাক হতে হয়। এ কোন সভ্যতায় আমাদের বসবাস! প্রসঙ্গত এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করা যায়। দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) সাবেক প্রধান জেমস কোমি তার নতুন একটি বইয়ে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন একজন মাফিয়া বসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন যিনি পরম আনুগত্যের কাঙাল। গোটা বিশ্ব তার বিরুদ্ধে চলে গেলেও তিনি সব বিষয়ে একের পর এক মিথ্যা বলে গেছেন। দাঙ্গাকারী নেতার মতো হোয়াইট হাউস চালান ট্রাম্প।
কোন চায়ের আড্ডায় নয়, ছাপার অক্ষরে মুদ্রিত কোন গ্রন্থে যখন বলা হয়-দাঙ্গাকারী নেতার মতো হোয়াইট হাউস চালান ট্রাম্প, তখন উপলব্ধি করা যায় মার্কিন নেতৃত্ব এবং প্রশাসন কোথায় এসে পৌঁছেছে। ‘আ হায়ার লয়্যালটি : ট্রুথ, লাইস এন্ড লিডারশিপ’ নামক বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল)। কিন্তু গত বৃহস্পতিবারই বইটির অংশবিশেষ মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে একটি ভিডিওর অস্তিত্ব নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বিগ্ন হওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ভিডিওচিত্রে ট্রাম্পের ভাড়া করা রুশ গনিকাদের মস্কোর একটি হোটেলরুমে বিছানার ওপর মূত্রত্যাগ করতে দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালের মে মাসে কোমিকে এফবিআই’র প্রধান পদ থেকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর খবরে বলা হয়েছে, কোমি বইটিতে লিখেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘একটি বিকল্প বাস্তবতার’ মধ্যে বসবাস করছেন। তিনি চাইছেন সবাই যেন তাকে তোয়াজ করে চলে।
ট্রাম্পের অধীনে এফবিআই’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গেও বক্তব্য রেখেছেন কোমি। তিনি বইটিতে লিখেছেন, ‘এটা ছিল সম্পত্তির নীরব বৃত্ত। সবকিছু ছিল নেতার নিয়ন্ত্রণে। আনুগত্যই ছিল সব। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গোটা বিশ্ব। সব বিষয়ে মিথ্যা, হোক সেটা ছোট বা বড়। দায়িত্বের ক্ষেত্রে আনুগত্যের কারণে প্রতিষ্ঠানটি নৈতিকতাও সত্যের ওপর চলে গিয়েছে।’ তিনি আরও লিখিছেন, ‘কোন্টা ঠিক কোন টা বেঠিক তা বোঝার মতো বুদ্ধি ট্রাম্পের নেই। এটা তার সহজাত সমস্যা।’ বইটির বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, কোমি লিখেছেন, ‘এই প্রেসিডেন্ট অনৈতিক। তিনি সত্য ও প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত। তার নেতৃত্ব লেনদেনের অহংবোধে চালিত ও ব্যক্তিগত আনুগত্যের।’ এফবিআই’র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধানের এমন মন্তব্যের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পর্কে দশবার ভাবতে হয়। তবে এই ভাবনাটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের চাইতে মার্কিন নাগরিকদের বেশি হওয়ার কথা। তাই তাদের ভাবনা ও আচরণ এখন অন্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।