সোমবার ১৩ মে ২০২৪
Online Edition

শ্রীলংকায় আরও প্রভাব বৃদ্ধিতে উদ্যোগী চীন

চীনের অর্থায়নে নির্মিয়মান শ্রীলংকার একটি প্রকল্প

২৫ আগস্ট, রয়টার্স : চীন শ্রীলংকার উত্তরে আরও সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায়। গৃহযুদ্ধের অবসানের পর দীর্ঘ সময় ধরে ওই অঞ্চলের সড়ক ও অবকাঠামো বেহাল দশায় রয়েছে। চীন যদি এবার শ্রীলংকার উত্তর অংশের অবকাঠামো গড়ে তোলার সুযোগ পায় তাহলে দেশটির দক্ষিণ থেকে এবার উত্তরেও প্রভাব বিস্তার করতে পারবে চীন। বার্তা সংস্থা লিখেছে, স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে একটি গৃহায়ন প্রকল্প চীনের হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর সেই সুযোগে ভারত আবার শ্রীলংকার অবকাঠামো নির্মাণ খাতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। চীন শ্রীলংকাকে আশ্বস্ত করেছে, এবার প্রকল্প পেলে তারা কম খরচে এবং দ্রুততার সঙ্গে তা বাস্তবায়ন করবে। এমন কি গ্রামীণ জনপদের প্রকল্পও বাস্তবায়ন করে দেবে।

শ্রীলংকায় চীনের বিনিয়োগ ও অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সমালোচকরা বলেন, চীন যেসব শর্তে বন্দর ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে তাতে শ্রীলংকার জনগণ বিপুল পরিমাণ ঋণের নিচে চাপা পড়েছে। তা সত্তে¦ও কলোম্বতে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের প্রধান রাজনৈতিক কর্মকর্তা লুয়ো চং জানিয়েছেন, চীন শ্রীলংকার উত্তর ও পূর্ব অংশে অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায়। ওই অঞ্চলে তামিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে শ্রীলংকার সেনাবাহিনী প্রায় ২৬ বছর রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধে লিপ্ত ছিল। ২০০৯ সালে সেই যুদ্ধের অবসান হয়। যেহেতু এখন সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত সেহেতু চীন দেশটির আরও প্রত্যন্ত এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায়। চীনা এই কূটনীতিক উল্লেখ করেছেন, চীন শ্রীলংকার সরকার ও তামিল উভয় পক্ষের সহযোগিতা নিয়েই এগোতে চায়।

এর পেছনে রয়েছে হাত ছাড়া হয়ে যেতে থাকা গৃহায়ন প্রকল্প। গত এপ্রিলে শ্রীলংকার তামিল অধ্যুষিত এলাকায় ৩০ কোটি ডলারের একটি গৃহায়ন প্রকল্প পেয়েছিল ‘চায়না রেলওয়ে বেইজিং ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কো লিমিটেড’। জাফনায় তাদের ৪০ হাজার বাড়ি তৈরি করার কথা। চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়নের জন্য প্রস্তুতও ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের এক পর্যায়ে প্রকল্পটি থেমে যায়। চীনা প্রতিষ্ঠানটি সিমেন্টের তৈরি বাড়ি বানাতে চেয়েছিল। অন্যদিকে স্থানীয়রা চাইছিলেন ইটের তৈরি বাড়ি। তা না হওয়ায় ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে শ্রীলঙ্কা। ভারত অনুদান হিসেবে ইতোমধ্যে শ্রীলংকায় ৪৪ হাজার বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে। জাফনার পালালে বিমান বন্দর ও কানকেশানথুরিয়া বন্দরটি পুনর্নির্মান করার কথা ভারতের। দুইটি স্থাপনাই গৃহযুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

চীন যে শ্রীলংকায় নতুন অবকাঠামো নির্মাণের প্রকল্প পেতে চায় তা নিশ্চিত করেছেন শ্রীলংকার দুই জন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী। চীন তাদের আশ্বস্ত করেছে, প্রতিদ্বন্দ¦ীদের চেয় কম মূল্যে এবং দ্রুততর সময়ের মধ্যে তারা প্রকল্প সম্পন্ন করবে তারা এমন কি গ্রামীণ এলাকার অবকাঠামো নির্মানেও রাজি।

রয়টার্স লিখেছে, ভারতের সঙ্গে তামিলদের সংস্কৃতিগত ও নৃতাত্তি¦ক মিল রয়েছে। কিন্তু চীন সম্প্রতি শ্রীলংকায় বন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং সড়কের মতো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নৌপথের কাছে অবস্থিত। এমন একটি দেশে চীনের প্রবল উপস্থিতিকে বিশ্লেষকরা ‘স্ট্রিং অফ পার্ল’ কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দেখছেন। চীন চায় এশিয়া জুড়ে তার নিয়ন্ত্রণে বা বন্ধু দেশের নিয়ন্ত্রণে থাকা বন্দরগুলো দিয়ে মুক্তার মালার মতো নেটওয়ার্ক তৈরি করতে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ