খালেদা জিয়ার মুক্তি যতো বিলম্ব হবে আন্দোলন ততো তীব্র হবে
স্টাফ রিপোর্টার: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে, খালেদা জিয়ার মুক্তি যতো বিলম্ব হবে আন্দোলন ততো তীব্রতর হবে বলে জানিয়েছেন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই সাথে দু-এক দিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা দাবি পূরণ না হলে রাজপথে গণ মিছিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ -(বিএসপিপি) আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে তারা এসব কথা বলেন। বিএসপিপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজের) সভাপতি সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-আল নোমান, এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, তথ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজের) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ঢাবি’র সাদা দলের সভাপতি প্রফেসর এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, কৃষিবিদ নেতা হাসান জাকির তুহিন, জাবি’র শিক্ষক নেতা প্রফেসর ড. শামসুল আলম, এ্যাবের নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামিমুর রহমান শামিম, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মুহাম্মদ আনোয়ার, যুবদল নেতা কাদের সিদ্দিকী, ওলামা দল নেতা ক্বারী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আব্দুল্লাহ-আল নোমান বলেন, আগামী ডিসেম্বরে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন এবং আমরা তার মুক্তির দাবি করছি। এর কারণ নির্বাচনের পূর্বে তার ভূমিকা প্রয়োগ, রাজনীতিক ব্যক্তি হিসেবে, আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রুপকার হিসেবে এবং চলমান রাজনীতিক সংকট দূর করতে তার ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এই সরকারে পতনের মধ্য দিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে আমাদের অগ্রসর হতে হবে তাহলেই বেগম খালেদা মুক্ত হবে। অতীতে যত স্বৈরাচার ক্ষমতায় এসেছে তারা কেউ দশ বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আপনার সময় শেষ। বিদায় নিতেই হবে। জোর করে আবার ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন হলে জনগণ গর্জে উঠবে ৫২ এবং ৭১’র মত।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, বেগম জিয়াকে শুধু কারারুদ্ধ করা হয়নি তার চিকিৎসা নিয়ে সরকার তাচ্ছিল্য করছেন। তারা আবার মনে করছেন ২০১৪ সালের মতো ১৮-১৯ সালে আরেকটি বিনা ভোটের নির্বাচন করবেন। কিন্তু তা আর বাংলাদেশে হবে না। হুমকি, ধমকি, গুম, খুন হামলা-মামলা দিয়ে আপনাদের শেষ রক্ষা হবে না। বাংলাদেশের মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। তাদের অধিকার একবার কেড়ে নিয়েছেন বারবার নিতে পারবেন না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। অথচ বিনা অপরাধে সরকার এমন একটি কারাগারে তাঁকে রেখেছেন, সেখানে কোনো মানুষ থাকে না। তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। তিনি মৌলিক মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ তিনি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় নেত্রী।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সরকার একের পর এক মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়াকে কারারুদ্ধ রেখেছেন। যে মামলায় তার সাজা হয়েছে সেই মামলায় তিনি জামিনে মুক্ত। অথচ ২০১৪-১৫ সালের মামলায় জড়িত করে তার কারাজীবন দীর্ঘায়িত করছে।
তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়াকে মুক্ত করা কঠিন হবে কারণ তার সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিক। তাই রাজনৈতিকভাবে মাঠে থেকে তাকে আমাদের মুক্ত করতে হবে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বেগম জিয়াকে যদি মুক্তি দেওয়া না হয়। এবং তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হয়। তাহলে রাজপথে গণমিছিল করবো তার মুক্তির জন্য। আমরা বিশ্বাস করি তার মুক্তির জন্য যদি গণ মিছিল করা হয়। লাখো কোটি মানুষ এই সরকারকে তছনছ করে দিতে রাস্তায় নামবে।
শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা সুস্থ এবং মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যেতে চাই। মুক্তি যতো বিলম্ব হবে আন্দোলন ততো তীব্র হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন বিএনপি ক্ষমতায় এলে রক্ষা নাই। আমরা বলি খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিল আপনাদের রক্ষা নাই। তার আগেই আপনাদের রক্ষার বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যাবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে আবারও এক তরফা নির্বাচনের পায়তারা করছে। এটি কোনভাবেই হতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে কোন নির্বাচন হবে না। আপনাদেও সময় শেষ। আর মাত্র কয়েক দিন পালানোর সুযোগ পাবেন না।
তিনি বলেন, এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। তারা কোন নিয়ম নীতি মানেনা। তারা কোন আইন মানেনা। সারাদেশ আজ দুর্নীতিতে ঢেকে গেছে। এই দানব সরকারের পতন ঘটাতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে। তাহলেই এই দানব পালাতে বাধ্য হবে।
সেলিম ভূইয়া বলেন,হামলা মামলা আর হুমকি দিয়ে আর আন্দোলন দমানো যাবে না। আপনাদের সময় শেষ। সম্মান থাকতে বিদায় নিয়। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে জনতা নামবেই। সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী জেলে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবে আর দেশে কোটি কোটি সমর্থক ঘরে বসে দেখবে এটি ভেবে থাকলে আওয়ামী লীগ ভুল করছে।