শনিবার ১৮ মে ২০২৪
Online Edition

ক্যাসিনোর টাকা তারেক পেলে সরকার কি আঙ্গুল চোষে ? -নজরুল ইসলাম খান

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান -মো. আরিফ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশের পর্যটন এলাকায় ক্যাসিনোর অনুমতি দেওয়া হবে অনৈতিক। সরকার একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছে- বাংলাদেশে বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনো চালু করবে। এটা করলে দেশের মানুষ ধ্বংস হবে। তিনি বলেন, যে ঘটনা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে, সেখানে সরকার কীভাবে বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনো করার ঘোষণা করে?
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম রাজা ও শ্রমিক নেতা গাজী বুরহান প্রমুখ।
মঈন খান বলেন, এদেশের জনগণ যদি পাপ করে আর সেটা যদি পাপ বলে গণ্য হয়, তাহলে বিদেশিরা এদেশে এসে যদি পাপ করে তাহলে সেটা পাপ হবে না? আমি দোষ করলে দোষ আর বিদেশিরা দোষ করলে দোষ নয় কেন? আর যদি বিদেশিরা দোষ করলে দোষ হয়, তাহলে বিদেশিদের জন্য এদেশে কেন ক্যাসিনো চালু করা হবে?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবৎ সারা বাংলাদেশ যেখানে ক্যাসিনো নিয়ে তোলপাড় হয়ে গেল, সেখানে সরকার কীভাবে ঘোষণা করে যে, তারা নাকি বিদেশিদের জন্য বাংলাদেশে ক্যাসিনো করবে। আমার অবাক লাগে, কীভাবে এত বড় ঘটনার পরও সরকারের পক্ষ থেকে বুক ফুলিয়ে এমন একটি কথা... আজকে আমি খবরের কাগজে দেখতে পেলাম। ক্যাসিনোর সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, বিদেশিদের জন্য ক্যাসিনো চালু করা হলে সেই ক্যাসিনোতে আমার দেশের জনগণ যে জড়াবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে? বিদেশিরা আমার দেশের জনগণের চরিত্র যে হরণ করবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
বিএনপি একটি গণতন্ত্রিক রাজনৈতিক দল আখ্যায়িত করে মঈন খান বলেন, গণতন্ত্রকে আমরা বিশ্বাস করি। এজন্য একটি মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা সত্ত্বেও নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আজকে আমরা শপথ নিয়েছি, খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে আমরা ঘরে ফিরব না। আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা মানুষের জন্য রাজনীতি করে। নিজেদের জন্য রাজনীতি করে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের বিভিন্ন নেতার বাসা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সেটা প্রমাণ হয়ে যায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান প্রশ্ন করে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা ক্যাসিনোর টাকা যদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পাঠায়, তাহলে সরকার কি বসে বসে আঙুল চোষে? বিএনপি-জামায়াত করা লোকদের আওয়ামী লীগের বড় বড় পদে শেখ হাসিনা কেন বসিয়েছেন, এমন প্রশ্ন রেখে নজরুল ইসলাম বলেন, খন্দকার মোশতাক যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িত সবাই জানে, সেই মোশতাকের রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সে এখন আওয়ামী লীগার হয়েছেন।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর মতো বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জিয়া পরিবারের বিষোদগারের দায়িত্ব পেয়েছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে যারা ক্যাসিনোর শহর বানিয়েছেন তাদের আপনারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। আপনাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া তারা এগুলো করতে পারতো না।
তিনি বলেন, যারা ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে ধরুন। বাংলাদেশ থেকে ক্যাসিনোর ক্যালচার দূর করুন। লুটপাটের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। কিন্তু আপনার এটা করতে পারবেন না। কারণ এ অনাচার যত বাড়তে থাকবে তত আপনাদের নেতার লাভবান হবেন। তিনি বলেন, এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য সরকার পরিবর্তন দরকার। সরকার পরিবর্তন ছাড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে জনগণের অধিকারও প্রতিষ্ঠিত হবে না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ