রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

আইস হকি যেন মহাস্বপ্ন!

মোহাম্মদ সুমন বাকী : ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল। এমন সীমানা নির্ধারণের প্রেক্ষাপটে এটার পরিচিতি সাউথ (দক্ষিণ) এশিয়া অঞ্চল হিসেবে। খেলাধুলার সংখ্যা অভাব নেই যেখানে। বিশ্বের জন প্রিয় খেলা ফুটবল। বলেন কি আপনারা? প্রশ্নটি চমক সৃষ্টি করার মতো। তা বলাবাহুল্য। যা  সবার বোধগম্য। হ্যাঁ এই ধারায় ফুটবল এখানে খুবই জনপ্রিয়। বর্তমানে দুটি ঘরোয়া লীগ বিশ্বের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেটা উল্লেখ করা প্রয়োজন। শুধুমাত্র গোল বলের আকর্ষণীয় আয়োজনের সফল উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবার কারনে। তা কল্পনা করতে বুক কেঁপেছে প্রাথমিক পর্যায়ে। মনের মাঝে বার বার প্রশ্ন জেগেছে স্থায়িত্ব পাবে কি পাবে না? যা সত্য কথা। এমন পরিস্থিতি সাউথ এশিয়ার ফুটবলে প্রথম পেশাদারিত্বের ছোঁয়া স্পর্শ করে ২০০৭ সালে। সেটা ফিফার গাইড লাইন অনুসারে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। তা এই জনপ্রিয় ক্রীড়ার চারদিকে আলো ছড়াবার প্রচেষ্টা মাত্র। এর সুফল নিয়ে কেউ বিন্দু পরিমান ভাবেনি তখন। ফর্মূলা বাস্তবায়নের বিষয় বিবেচনার প্রেক্ষাপটে যা অবাক করে ছাড়ে ! ৎ
কারণ লীগ মাঠে গড়ায় ঠিকই। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ নির্ধারনের বেলায় কর্মকর্তা, দর্শক ও অন্যদের মুখে শোভা পায় অনিশ্চয়তাময় একথা-দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয? এমন প্রশ্ন ভয় সৃষ্টি করলেও পরবর্তী সময়ে পেশাদার লীগ আয়োজন করার ক্ষেত্রে সাফল্যের জোয়ারে ভেসে নিয়ে যায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে। ২০০৭ থেকে ১৯ সাল, এই সময়ের মধ্যে কর্মকর্তারা সফল। যা তুলে ধরতে হয় এখানে। আবার ধারাবাহিক আয়োজন। দেশ-বিদেশে মিডিয়ার প্রচার। সবকিছু লাল -সবুজ পতাকা দেশের জন্য দারুন উপহার। সেটা ফুটবলের সাবেক এশিয়া চ্যাম্পিয়ন ভারতের তুলনায়। কারন সে সময় পার্শ্ববর্তী দেশে ফিফার গাইড লাইনের পেশাদারিত্বের ছোঁয়া লাগেনি। তা জানা রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া বাসির। এমন পর্যালোচনায় সত্যি সৌভাগ্যবান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলে। অবশ্য আর অপেক্ষা করেনি সাবেক দুই বারের এশিয়া চ্যাম্পিয়ন ভারত। তারা ও মাঠে নেমে পড়েন। বলিউড এবং ক্রিকেট তারকা সম্পৃক্ত করেন। বড় ধরনের আয়োজন। ফুটবল মহাস্টারদের পদচারনা ঘটে। যা সমুদ্র পাড়ের সোনালী রৌদ্রের ছোঁয়ায় আলোকিত। এমন প্রেক্ষাপটে ইন্ডিয়া হিরো লীগের উত্তেজনাময় আয়োজন সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সেটা এখন ফিফার গোল টেবিলে আলোকিত ধারায় আলোচিত। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটকে মনে হয় সারা দুনিয়ার খেলা। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ।সংখ্যায় গনার ধারায় আট দেশ নিয়ে সাউথ এশিয়া অঞ্চল গঠিত। সিনিয়র এবং অনুর্ধ্ব লেবেলের ক্রিকেটে দাপট দেখা গেছে বীরের মতো। তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিভিন্ন লেবেলের ক্রিকেটে মোট ছয়টি দেশ বিশ্বকাপ অংশ নিয়েছে। যা বিশ্ব ক্রিকেট (গাংগুটি) ভুবনে গর্বের বিষয় বজায় রেখে। সেটা দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে। বিভিন্ন লেবেলে বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা অংশ গ্রহন কারী ছয়টি দল হলো ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও নেপাল। তাদের দাপটের পারর্ফম পরিলক্ষিত হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা বিভিন্ন টুর্নামেন্টসহ বিশ্বকাপ জিতেছে। এক কথায় বলা যায় তারা দুর্বার। যাদের পাশাপাশি সাফল্যের তালিকায় বাংলাদেশ, আফগানিস্তান নাম লিখিয়েছে। এক্ষেত্রে নেপাল অনেকদূর পিছিয়ে রয়েছে। স্কোয়শ ক্রীড়ায় পাকিস্তান এবং ভারতের আধিপত্য ফুটে উঠেছে। তা বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনকে মাতিয়ে তুলে ছাড়ে। যা সকলের জানা আছে। এমন ধারায় ভারত, শ্রীলংকা এ্যাথলেটিকসে সাফল্য পায়, প্রশংসার জোয়ার বইয়ে দিয়ে। যোগ্য প্লেয়ার, টিম এটাকে বলে। সেটা উদ্ভাসিত নৈপূণ্য প্রদর্শন করার গুণে। বিশ্ব ভুবনের পর্যালোচনাতে ব্যাডমিন্টন, কাবাডি, টেবিল টেনিস, দাবা, ভলিবল, হ্যান্ডবল, টেনিসের লড়াইয়ে আলোকিত নাম দল ভারত (টিম ইন্ডিয়া)। তা কে না জানে? যা কোটি কোটি দর্শকের হৃদয়ে গেথেঁ আছে। সেটা ভুরি ভুরি সাফল্য পাওয়াকে ঘিরে। তা ছাড়া অন্য ক্রীড়াগুলোতে ইন্ডিয়ার দাপট স্পষ্ট আকারে ফুটে উঠে। যা দক্ষিণ এশিয়াকে (এশিয়া) বার বার সঙ্গী হিসেবে আধিপত্যের তালিকায় পাকিস্তানেরও নাম রয়েছে। বিশ্বকাপ, অলিম্পিক, এশিয়া কাপসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আকর্ষণীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা সাফল্যের সন্ধান পেয়েছে। সে জন্য দক্ষিণ এশিয়া গর্ব করতে পারে তাদেরকে নিয়ে। স্টিক বলের খেলার ছোঁয়াতে। অবশ্য সেটা ফিল্ড হকি ঘিরে রেখে। কিন্তু কথা আছে ! তা অবাক করে ছাড়বে সবাইকে। বার, স্টিক, বল, সরঞ্জাম রয়েছে। বরফ গেরা ঠান্ডা পরিবেশ ফুটে উঠে। দর্শকের ঢল নামে যেখানে। যা বিশ্ব দরবারে আলেকিত করেছে এই ক্রীড়াকে। এমন পরিস্থিতিতে চোখ ফেরানো যায় না টিভির পর্দা থেকে। কারন খেলাটি রিস্কি হলেও খুবই জনপ্রিয়। সেটা সকলের বোধগম্য। বেশি শক্তি প্রয়োগ করে খেলতে হয়। তাই মনে লুকিয়ে থাকে ভয়। এমন ক্রীড়াটির নাম আইস হকি। দক্ষিণ এশিয়া এর ছোঁয়া পায়নি আজ পর্যন্ত। টুর্নামেন্টতো পরের কথা আইস হকির প্র্যাকটিস নেই দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলে।
ভারত ও পাকিস্তানের কিছু অংশ এলাকায় বরফ পড়ে। পরিবেশ এটুকু পর্যন্ত। অন্য এলাকাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাকী দেশগুলো নিঃসন্দেহে বরফমুক্ত। যা উল্লেখ করা প্রয়োজন। কারন সেটা আইস  হকির জন্য পারফেক্ট পরিবেশ নয়। তা অক্ষরে অক্ষরে শব্দের সংযোজনের বাক্যে তুলে ধরতে হয়। বরফ পড়া এলাকার কিছু অংশ নিয়ে সাউথ এশিয়ায় আকর্ষণীয় এ ক্রীড়ার আয়েজন কোনোভাবে সম্ভব না। যা এক প্রকার নিশ্চিত। এই অবস্থায় দক্ষিণ অঞ্চলতো ভালো কথা গোটা এশিয়ায় এর প্রচলনের সম্ভাবনা কম। সেটা ইতিহাস বলে। এমন বিষয়ে কি অভিমত ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের? তারা কি মনে করেন? মূলত আইস হকির জন্য উপযুক্ত স্থান ইউরোপ অঞ্চল। যেখানে প্রচুর বরফ পড়ে। আইসল্যান্ড, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, রাশিয়াসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ইংল্যান্ড হচ্ছে বরফ পড়া ঘেষা বৃহৎ অঞ্চল। তা বলবাহুল্য। যার ফলে সেখানে আইস হকির চর্চা হয় অনেক বেশি। সে তুলনায় অন্য মহাদেশগুলো এমন ধারার আয়োজনে বহুদূর পিছিয়ে রয়েছে। যা এই ক্রীড়াটির আসল বিষয় (বরফ পড়া) হিসেবে বিশ্ব দরবারে বিবেচিত। সেটা সত্য কথা এ ক্ষেত্রে আইস হকিতে ইউরোপের দলের সংখ্যাই বেশি। সুতরাং তাদের সঙ্গে অন্য মহাদেশের টিমগুলো টেক্কা দিয়ে পেরে উঠা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় আইস হকির বাস্তবায়ন হওয়াটা যেন মহাস্বপ্ন ! কোটি কোটি ক্রীড়া পাগল প্রেমী কি বলবেন এই প্রসঙ্গে? যা আপনাদের জানার মাঝে হৃদয়ে স্থান পেয়েছে!

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ