রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

পেশাজীবীদের পিপিই প্রদান করবে বিজিএমইএ

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করবে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানায়, এ মুহূর্তে বিতরণের উদ্দেশ্যে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ হাজার পিপিই পোশাক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এগুলো প্রথম স্তরের পিপিই (লেভেল-১) এর পরিপূরক হিসাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তারা জানায়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার ও কর্মীদের প্রয়োজন লেভেল ৩-৪ পিপিই। পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যে পিপিই তৈরি করছেন, তা সনদপ্রাপ্ত নয়। এগুলো শুধুমাত্র শতভাগ পানিপ্রতিরোধক এবং এর নকশা স্বাস্থ্যবিষয়ক পেশাজীবীরা যে ধরনের পিপিই ব্যবহার করেন, তার কাছাকাছি। এই পিপিই পোশাক সেই সব ডাক্তার ও স্বাস্থকর্মীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে, যারা আতঙ্কিত হয়ে কর্মস্থলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাহায্য নিয়ে রপ্তানি উপযুক্ত পিপিই বানানোর যাবতীয় কারিগরী জ্ঞান অর্জন করতে এবং প্রয়োজনীয় মেশিন ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদী হাতে পেতে এই শিল্পের ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আশা করছেন, শুধুমাত্র করোনা উপসর্গধারী রোগীদের চিকিৎসা চলাকালে পিপিই ব্যবহার হবে তা নয়, বরং তারা পেশাগত সকল কর্মকাণ্ডে সুরক্ষা পাবেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা প্রয়োজনে বিজিএমইএ সহযোগিতা করার উদ্যোগ নিয়েছে। পিপিইয়ের ফেব্রিক্স ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে ইতোমধ্যে বিজিএমইএ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা মহাপরিচালকের (ডিজিএইচএস) থেকে অনুমোদন নিয়েছে।
বর্তমানে বিজিএমইএ’র অনেক সদস্য প্রতিষ্ঠান ফেব্রিক্স দানে এগিয়ে এসেছে। এ ছাড়াও আরও অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের স্ব স্ব কারখানায় বিনামূল্যে পিপিই তৈরি করার বিষয়ে বিজিএমইএকে প্রস্তাবনা দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ এসব ফেব্রিক্স ক্রয়ের জন্য একটি তহবিল গঠন করার বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছে। বিজিএমইএ জানায়, বাংলাদেশে পোশাক উদ্যোক্তারা পিপিই প্রস্তুত করেন না। পিপিই প্রস্তুত করতে যে ফেব্রিক্স ব্যবহার করা হয় তার মেডিকেল গ্রেড থাকে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান বজায় রেখে প্রস্তুত করতে হয় যা মূলত চীন থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া পিপিই পোশাক তৈরির জন্য কারখানাগুলোকে বিশেষ ধরনের মেশিনারিজ ব্যবহার করতে হয়। কারখানায় জীবাণুমুক্ত পরিবেশে উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রশিক্ষণও দরকার। সবমিলিয়ে বাংলাদেশী কারখানায় পিপিই তৈরি করার জন্য কমপক্ষে ৬ মাস অথবা এর অধিক সময় লাগবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়। এছাড়া, উদ্যোক্তারা বিকল্প উৎস হিসেবে চীন থেকে পিপিই এর ফেব্রিক্স আনছেন। এতে ১৫-২০ দিন লাগবে। বিমানপথে এখন দীর্ঘসূত্রীটা বেশি। তাই যখনই আমদানিকৃত ফেব্রিক্স উদ্যোক্তাদের হাতে আসবে, তখনই তারা পিপিই তৈরিতে এই ফেব্রিক্স ব্যবহার করা শুরু করবেন বলে জানায়।
বিজিএমইএ জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিপিই রপ্তানি করা এবং অতি দ্রুতার সাথে এই কাজটি করতে চায়। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে আইএলও, ডব্লিউএইচও, ডব্লিউএফপি এবং ইউনিসেফসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে আলোচনা করেছেন। আমাদের সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে পিপিই তৈরি করতে পারি, সে ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। সংস্থাগুলোও সরবরাহ লাইনে সহযোগিতা প্রদানসহ কারিগরী জ্ঞান বিনিময়ে আমাদেরকে সাহায্য করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। এই প্রচেষ্টা নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ