রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ মুখোমুখি নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া

রফিকুল ইসলাম মিঞা : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল আজ। ফাইনালে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। প্রথমবার শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ মাঠে নামবে দল দুটি। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ফাইনালে উঠায় সপ্তম আসরে নতুন চ্যাম্পিয়ন দল পাচ্ছে ক্রিকেট বিশ্ব। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনাল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। ১৪ ম্যাাচে মুখোমুখি হয়ে ৯বার জিতেছে অসিরা। পাঁচ জয় কিউইদের। আর বিশ্বকাপের মঞ্চে একবার দেখা হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের। সেটিতে জয় পেয়েছিলো কিউইরা। ২০১৬ সালে সুপার টেনে ৮ রানে জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ড সফরে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে অসিরা। দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১০ সালে ফাইনালে উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি দলটি। ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে ম্যাচ হারে অস্ট্রেলিয়া। এরপর আর ফাইনালের টিকিট পায়নি অসিরা। সপ্তম আসরে এসে আবার ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। এবার সুপার টুয়েলভে ৫ ম্যাচের ৪টিতে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিলো শক্তিশালী পাকিস্তান। বেশিরভাগ সময়ই সেমির ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে পাকিস্তান। নিজেদের ও অস্ট্রেলিয়া  ইনিংসের ১৫ ওভার পর্যন্ত চালকের আসনেই ছিলো পাকিস্তান। কিন্তু ১৬ থেকে ১৯ ওভারের মধ্যে ম্যাচে মোড় ঘুড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটার মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড। ষষ্ঠ উইকেটে ৪১ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানের জুটি গড়ে সেমির লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন স্টয়নিস ও ওয়েড। ৫ উইকেটের জয়ে ফাইনালে উঠে অসিরা। সেমিফাইনালে স্টয়নিস ও ওয়েডের পাশাপাশি কথা বলেছে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাট। আজ ফাইনালের মঞ্চে আরও একবার ওয়ার্নারের জ্বলে উঠার অপেক্ষায় থাকবে অস্ট্রেলিয়া। তবে নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করলেও ফাইনাল জিততে চান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘এটি ফাইনাল ম্যাচ। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড অনেক ক্যালকুলেটিভ দল। তারা অনেক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ফাইনাল জিততে হবে এবং প্রথমবারের মত শিরোপার স্বাদ নিতে হবে।’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারই প্রথম ফাইনাল খেলছে নিউজিল্যান্ড। আগের ছয় আসরে কিউইদের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিলো সেমিফাইনাল। ২০০৭ ও ২০১৬ সালের সেমিতে খেললেও ফাইনালে খেলার সুযোগ এবারই প্রথম হলো নিউজিল্যান্ডের। সুপার টুয়েলভে পাকিস্তানের কাছে শেষ মুর্হূতে হেরে বসলেও, ম্যাচে নিজেদের সেরাটাই ঢেলে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ভারতকে হারানোর পর, আফগানিস্তান-স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়ার বিপক্ষেও জয় তুলে নেয় কিউইরা। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড পায়  শিরোপার অন্যতম দাবিদার ইংল্যান্ডকে। ওপেনার ড্যারিল মিচেল ও জেমস নিশামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারায় নিউজিল্যান্ড। আর প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে চায় নিউজিল্যান্ড। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছি আমরা। শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরনীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের  চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অসিদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’ পুরো আসরেই  এ পর্যন্ত  নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ও বোলাররা ভাল  পারফরমেন্স করেছে। দলের সেরা ব্যাটাররা রানের মধ্যেই আছেন। আসরে মিচেল ১৯৭, গাপটিল ১৮০, উইলিয়ামসন ১৩১ ও কনওয়ে ১২৯ রান করেছেন। তবে ফাইনালের মঞ্চে কনওয়ের সার্ভিস পাবে না নিউজিল্যান্ড। নিজের ভুলে হাত ভেঙে ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েন কনওয়ে। নিউজিল্যান্ডের বোলিংকে দারুনভাবে সামাল দিচ্ছেন দুই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত বোল্ট ১১টি ও সাউদি ৮ উইকেট শিকার করেছেন । স্পিন বিভাগে দারুন ফর্মে আছেন ইশ সোধি। ৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি। স্পিন ঘুর্ণিতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারদর্শী সোধি। তাই ব্যাটার ও বোলারদের সম্বনয়ে ফাইনালে মঞ্চে আরও একটি শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে নিউজিল্যান্ড। এ বছর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলো কিউইরা। তবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম শিরোপার স্বপ্ন নিউজিল্যান্ডের।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ