রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর বাজারে এখনো কাঁচা মরিচের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। দেশী পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা, চিনি ১৪০ টাকা, আদা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা কেজি, ৬০ টাকার কমে বাজারে কোন সবজি নেই। সয়াবিন তেলের লিটার ১৯০ টাকা, আর আটা ময়দাও ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সবমিলিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ঈদের আগে থেকে এ অস্বস্তি শুরু হলেও এখনো কমছে না।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ঈদ শেষে গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরেছেন অনেকেই। বাজারে বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সব ধরনের শাক-সবজির দাম। গোল আলু, টমেটো, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, করলা, পটল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, কচুর লতি, ঢ্যাঁড়শ, লাউশাক, পালংশাক, লালশাক, কলমি শাকসহ সবধরনের শাক-সবজির দাম বেড়েছে। লম্বা বেগুন  ১০০ টাকা,  গোল বেগুন ১২০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, করল্লা ১০০-১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০, পেঁপে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১২০-১৪০ টাকা,  টমেটো ২৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা ,  ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৬০-৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা,  ধুন্দল ৮০-৯০ টাকা, সজনে ১২০ টাকা , বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩২০ টাকা কেজি। লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৬০ টাকা পিস।

ঈদের পর মাছের চাহিদা বাড়ায় বেড়েছে দামও। প্রতি কেজি রুই-কাতলা মাছ ৩৩০-৩৬০ টাকা, পাঙাশ-তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০-২৫০ টাকা, পাবদা-গুলশা-ট্যাংরা জাতীয় মাছ ৫৫০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক কেজি বা ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২০০-২০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গরু, খাসির গোশত ও মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ডিমের। গরুর গোশত ৮০০ টাকা, খাসি ১২০০ টাকা, ব্রয়লার ২০০-২২৫ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা হালি দরে। এক ডজন নিলে রাখা হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা।

এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৭৫ টাকা, আদা ৩২০-৩৬০ টাকা, দেশি রসুন  ১৬০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২০০ টাকা, আলু ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, আটা ১৩০ টাকা (২ কেজির প্যাকেটে), খোলা ময়দা ৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, প্যাকেট সয়াবিন তেল  ১৮৯ টাকা, খোলা সরিষার তেল ২৫০ টাকা লিটার, খোলা চিনির কেজি ১৩৫-১৪০ টাকা।

বাজার করতে আসা ক্রেতারা রয়েছে অস্বস্তিতে। সবাই জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আর অবিলম্বে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় বিক্রেতারাও নাখোশ।

ফয়সাল নামের ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, সব জিনিসের অতিরিক্ত দাম। সবকিছুর দাম বাড়লেও আমার বেতন তো বাড়েনি। গোশতের যে দাম তাতে আমার মতো মানুষের গোশত খাওয়া এখন বিলাসিতা। কিছুই বলার নেই। দাম বাড়ে আর আমরা কিনে খাই। এভাবেই চলছে। কিছুই ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই।  

আলী আজম নামে এক ক্রেতা জানান, প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়তি। বাজার করতে আসার আগে যে পরিকল্পনা থাকে বাজারে এসে তা ভেস্তে যায়। লিস্ট লম্বা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক হিসাব করে পরিমাণে কম নিয়ে বাজার করতে হচ্ছে। সরকার বোতলজাত গ্যাসের দাম কমালেও আমি গতকাল ১২০০ টাকাতে কিনেছি। এই কাঁচা বাজারেও একই অবস্থা।

বিক্রেতারা জানান, আড়ৎদারদের সিন্ডিকেটেই সব হয়। পাইকারি বাজারে অতিরিক্ত দামে জিনিসপত্র কিনতে হয়, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বেড়েছে। আর পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি। খোলা বাজারে এমন হবেই। দাম বাড়বে-কমবে। তবে পেঁয়াজের দাম কিছুদিন ধরেই বেশি চলছে। বেশি দামে পেঁয়াজ কিনলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে বিক্রেতাদের কিছুই করার নেই বলে তারা জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ