ঢাকা, শনিবার 04 May 2024, ২১ বৈশাখ ১৪৩০, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

পদ্মা ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ, চার ব্যাংকে নতুন মুখ

সংগ্রাম অনলাইন: পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। গত রোববার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে ব্যাংকটির একজন পরিচালক জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরিচালক বলেন, এমডির পদত্যাগ-সংক্রান্ত একটি নোটিশ পেয়েছি। সেখানে তিনি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন বলে উল্লেখ করেন। তার পদত্যাগের বিষয়টি চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়েছে।  এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তারেক রিয়াজ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাড়া দেননি। ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগে যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি। ফলে ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে, ইতিমধ্যে তাঁকে এমডি হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রবাসীদের উদ্যোগে গঠিত এনআরবি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের পর তিনি এনআরবি ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেবেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনআরবি ব্যাংকের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুন মাহমুদ শাহ, এরপর থেকে ব্যাংকটি ভারপ্রাপ্ত এমডি দিয়ে চলছে।

অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে ছুটিতে পাঠানো এমডি মো. হাবিবুর রহমান এখনো চাকরিতে ফিরতে পারেননি। পাশাপাশি এমডি পদে নতুন মুখ পেয়েছে মেঘনা ব্যাংক। এ ছাড়া প্রিমিয়ার, এনসিসি ও বেসিক ব্যাংকের এমডি পদে নিয়োগ নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে সংকটে থাকা পদ্মা ব্যাংক। এ বিষয়ে ব্যাংক দুটির পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্তও নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই দুটি ব্যাংকের নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। 

পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে তারেক রিয়াজ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু পদ্মা ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে, তাই পদত্যাগ করেছি। নতুন কোনো ব্যাংকে যাওয়া যায় কি না, সেটা দেখছি।’

এদিকে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শরিয়া ব্যাংকে রূপান্তর হওয়া স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেন মো. হাবিবুর রহমান। মেয়াদ শেষের আগেই গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয় তাঁকে। ব্যাংকটির পর্ষদের একজন প্রভাবশালী পরিচালকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলে এ নিয়ে পরিদর্শন শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি এ বিষয়ে ব্যাংকটির সঙ্গে আলোচনাও করে। তবে এমডিকে পদে ফেরানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পরিদর্শনে এমডির কোনো দোষ না পেলেই তাকে কাজে যোগ দিতে হবে। শিগগির এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এখন আর আগের মতো এমডিদের যখন-তখন বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই।

এদিকে মেঘনা ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দিয়েছেন কাজী আহসান খলিল। এর আগে তিনি এনআরবি ব্যাংকের ডিএমডি ছিলেন। রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের এমডি হিসেবে আবারও এক বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন আনিসুর রহমান। প্রিমিয়ার ব্যাংক অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ আবু জাফরকে এমডি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে তিনি ঢাকা ব্যাংকে ছিলেন। এনসিসি ব্যাংক এম শামসুল আরেফিনকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এসব আবেদন এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

এখন এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটির কাছে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এরপরই তাঁর নিয়োগ ও মেয়াদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে। সব ব্যাংক এমডির চুক্তির মেয়াদ প্রতিবারের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর। আগে এক মেয়াদে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য এমডি নিয়োগের বিধান ছিল। ব্যাংকের এমডিদের নিয়োগ ও দায়দায়িত্ব–সম্পর্কিত নীতিমালায় এমডিদের সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের এমডি চাইলেই হঠাৎ করে পদত্যাগ করতে পারবেন না। আবার ব্যাংক কর্তৃপক্ষও যখন-তখন কোনো এমডিকে সরিয়ে দিতে পারবে না। অর্থাৎ মেয়াদ শেষের আগে কোনো এমডিকে ব্যাংক ছাড়তে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে। সেই কমিটি যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা-ই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ