ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা লুটপাট হচ্ছে ------------ কর্নেল অলি
স্টাফ রিপোর্টার : ঋণের নামে ব্যাংকের টাকা লুটপাট চলছে বলে অভিযোগ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। এসময় এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অলি আহমদ বলেন, ব্যাংকের টাকা ঋণের নামে লুটপাট করছে। ঋণের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। যে যা লুট করছে তার তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ করেনি। টাকা পাচারকারীদের কোনো তালিকাও প্রকাশ করেনি। অনেক ব্যাংকে নগদ টাকা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রতিনিয়ত টাকা ধার করে দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করছে। টাকা পাচারের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য ব্যাংকের অবস্থা খুবই করুণ। এর সঙ্গে সরকারদলীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই জড়িত। টাকা পাচারকারী এবং লুটপাটকারীদের তথ্য ফাঁস হবে বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। টাকা পাচারকারী এবং ব্যাংক লুটপাটকারীরাই শতকরা ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি বিদেশে করেছে।
তিনি বলেন, শুধু ঢাকায় দৈনিক ৫০০ জন মানুষ কুকুর, বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছে, ভ্যাকসিন নেই। ডলার সংকটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিনিয়তই জনগণ সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। শেয়ার মার্কেটে পুনরায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। দরবেশরা ইচ্ছা অনুযায়ী লুটপাট করছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ আইএটিএ-এর। আইএটিএভুক্ত বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর নিকট পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এই পাওনা পরিশোধ না করলে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমানগুলো নামবে কিনা সন্দেহ আছে। গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ। ফলে শ্রমিকেরা অনেকে বেতন পাচ্ছে না। ব্যাংকের দেনা পরিশোধ হচ্ছে না। যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে, মালিকরা সর্বস্বান্ত হচ্ছে।
অলি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে চট্টগ্রাম, চন্দনাইশ, পটিয়া, সীতাকু-ু, মিরসরাই, ফটিকছড়িসহ অনেক জায়গায় পাহাড় কেটে ইটের ভাটা বানাচ্ছে এবং বসতি স্থাপন করছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি। ডলার সংকটের কারণে কাঁচামালের আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের দাম সরকার কয়েক দফা বৃদ্ধি করায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে, ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইদানিং পত্রপত্রিকায় সরকারি দলের অনেক রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপক দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সরকার এবং দুদক নীরব। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। দেশকে এই অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করুন। অন্যথায় দেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে। যার দায়-দায়িত্ব সবাইকে বহন করতে হবে।