শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নারী অধিকার রক্ষায় সৌদি আরবে নতুন আদেশ

৫ মে, আরব নিউজ : নারীদের অধিকার নিয়ে নতুন আদেশ আসছে সৌদি আরবে। ইসলামি শরীয়া অনুযায়ী কোনো বাধা না থাকলে (নারীরা সাবালিকা হওয়ার পর) নারীরা স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সৌদি বাদশাহ সালমানের রাজকীয় আদেশ জারি হয়েছে। নতুন আদেশ জারির ফলে এখন থেকে নারীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। এতদিন পর্যন্ত নারীরা বাড়ির বাইরে গেলে তাদের পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হতো। দেশের বাইরে যেতে এমনকি চিকিৎসার জন্যও একজন পুরুষ অভিভাবককে সঙ্গে নিতে হতো তাদের। কিন্তু এখন থেকে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন সৌদির নারীরা।
নারী অধিকার বিভিন্ন বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদের সাধারণ সচিবালয় কর্তৃক উত্থাপিত ওই প্রস্তাব অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় ওকাজ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিউম্যান রাইটস কমিশনের সভাপতি বন্দর বিন মোহাম্মদ আল-আইবান এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সাধারণ নাগরিকদের প্রতি বাদশাহ সালমানের ভালোবাসার নিদর্শন এটি। সৌদি আরবের জনসংখ্যার অর্ধেক নারীরা সমাজের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের অংশীদারিত্বের মূল্যায়ন অত্যন্ত ইতিবাচক।
 জেদ্দাভিত্তিক অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোপারেশনের (ওআইসি) পাবলিক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনের পরিচালক মহা আকিল আরব নিউজকে জানান, অভিভাবকত্ব পেয়ে পুরুষরা সবসময় নারীদের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, শেষ পর্যন্ত নারীরা নিজেদের অভিভাবকত্ব করতে পারবেন, অফিসের সব কাজ এবং নিজেদের ব্যক্তিগত কাজও করতে পারবেন তাদের অভিভাবকের কোনোরকম অনুমতি ছাড়াই।
মানবাধিকার কমিশনের মতে, সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে কার্যকর পদ্ধতি পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
 সৌদি আরবের ন্যাশনাল সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটস এর সিনিয়র সদস্য সুহাইলা জাইন আল-অওবিদান আরব নিউজকে বলেন, তার মানে পুরুষতান্ত্রিক অভিভাবকত্ব প্রত্যাহার হয়েছ। একজন পুরুষের অভিভাবক দাবি করার আইন সংশোধন করা হলো। এতে করে আর শরীয়া আইন নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না; কারণ আমরা পুরোপুরি সক্ষম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত পাঁচ বছরে, সৌদি আরবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে অনেক নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মরহুম বাদশাহ আবদুল্লাহ ২০১১ সালে নারীদের শূরা কাউন্সিলে যোগদানের অধিকার দেন। এছাড়া পৌর নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার দেন তিনি। ২০১৫ সাল থেকে নারীরা সেখানে ভোট দিতে পারছেন। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো শূরা কাউন্সিলে নারীদের নিযুক্ত করা হয়। তখন ৩০ জন নারী শূরা পরিষদের সদস্য হন। বর্তমানে শূরা পরিষদে সৌদি নারীদের প্রতিনিধিত্ব ২০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তিন মাস আগে সারাহ আল-সুহাইমি, রানিয়া নাশার ও লতিফা আল-শাবান নামে তিন নারীকে সৌদি স্টক এক্সচেঞ্জে চাকরি দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যানের পদে পুরুষ-প্রভাবশালী আর্থিক সেক্টরে নিগে  দেয়া হয়েছিল, সাম্বা ফিনান্সিয়াল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আরব ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (এএনবি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ